অ্যাসেম্বলিতে আগ্রহী নয় হরিপুরের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান - Dainikshiksha

অ্যাসেম্বলিতে আগ্রহী নয় হরিপুরের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান

হরিপুর (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ |

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি করানো বাধ্যতামূলক হলেও ঠাকুরগাঁও জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অ্যাসেম্বলি ক্লাস করানো হয় না। বিশেষ করে মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্টেন এবং মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে অ্যাসেম্বলি ক্লাস করতে তেমন আগ্রহী নয়। এতে শিক্ষার্থীদের দেশাত্মবোধ কমে যাচ্ছে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আফতাবউদ্দিন (রেজা) জানান, আমার জীবনে বেশির ভাগ সময় কেটেছে মাদ্রাসায়। আমি কোনদিন অ্যাসেম্বলি ক্লাস মিস করেনি, কারণ দলগত ভাবে জাতীয় সংগীত শুনতে কি-যে ভালো লাগে সেটা বুঝানো যাবে না। আর দুঃখজনক হলেও সত্য। বর্তমানে অনেক স্কুলে অ্যাসেম্বলি ক্লাস নিতে শিক্ষকরা অনীহা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, বৃষ্টি ও প্রচুর গরম বা বেশি ঠান্ডায় অ্যাসেম্বলি ক্লাস করেন না, তাহলে করেন কখন? এতে শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠ্য বইয়ের গদবাঁধা পড়া নিয়ে থাকবে। তাদের ভিতরে কোন দেশাত্মবোধের চেতনা সমৃদ্ধ হবে না। তারা বড় হয়ে মানবিকতা অ্যাসেম্বলি ক্লাস করানো বাধ্যতামূলক করা দরকার।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নগেন কুমার পাল, হরিপুর উপজেলায় অনেক কেজি স্কুল আছে। তবে নিয়মিত অ্যাসেম্বলি ক্লাস হয় কিনা সন্দেহ। কারণ তাদের অ্যাসেম্বলি ক্লাস করার মতো জায়গা নেই। অল্প জমিতে বা কারো বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে স্কুল করেছে। ফলে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তারা ক্লাস নির্ভর হওয়ায় তাদের অ্যাসেম্বলি করানো প্রস্তুতি নেই। আবার অনেকেই আছে অ্যাসেম্বলি করছে। কিন্তু সেটা মেটেও মান-সম্মত নয়। ৪র্থ এবং ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় সংগীত এবং শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছে। এতে অনেক সময় জাতীয় সংগীতের সুর বা কথা বিকৃত হয়ে পড়ে। এটা আরও মারাত্মক অপরাধ। তাই এ বিষয়ে খুবই গুরুত্ব দেওয়া দরকার। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে হরিপুর উপজেলা বেশির ভাগ কেজি,মাধ্যমিক স্কুল আর মাদ্রাসাগুলোতে নিয়মিত অ্যাসেম্বলি ক্লাস হচ্ছে না। আবার অনেক স্কুলে অ্যাসেম্বলি করানোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই।

অবসর প্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল হক জানান, শিশু বেলা থেকে শিক্ষার্থীদের চেতনা এবং প্রেরণাগত অবস্থা পরিপূর্ণ করতে অ্যাসেম্বলি ক্লাসের বিকল্প নেই। জাতীয় সংগীতের মর্ম বাণী যে কোন মানুষকে আবেগী করে আর শপথ বাক্য মানুষের জীবনকে পথ চালানো সহায়তা করে। সেখানে যদি স্কুল অ্যাসেম্বলি না হয় সেটা খুবই দুঃখ জনক। আমার জানামতে, অনেক কেজি স্কুল, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় বিভিন্ন অজুহাতে অনিয়মিত অ্যাসেম্বলি ক্লাস হয়। আর এখন যে কেজি স্কুল গুলো গড়ে উঠেছে সেখানেও পরিবেশ বা নানান কারণে অ্যাসেম্বলি ক্লাস হচ্ছে না। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নহে। এ বিষয়ে কঠোর ভূমিকা নেওয়া দরকার।

হরিপুর মোসলেমউদ্দিন ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, স্কুল জীবনে অ্যাসেম্বলি প্রত্যেকটি শব্দ এখনো আমাদের মনে গেথেঁ আছে। আর জাতীয় সংগীতের যে বাণী সেটা কখনো মলিন হওয়ার নয়। আমার মতে, অ্যাসেম্বলি ক্লাসই স্কুল জীবনের মূল। এখানে শৃঙ্খলা, অনুশাসন এবং দেশপ্রেম শিখা যায়। তাছাড়া বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে কিছু কেজি স্কুল চালাচ্ছে তারা অ্যাসেম্বলি ক্লাস করছে কোথায়? আর গ্রামের স্কুল গুলোর দিকে কারো নজরদারী বাড়ানো দরকার।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজার রহমান বলেন, অ্যাসেম্বলি করানো বাধ্যতামূলক কেউ সেটা না করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করবে। আর মানুষের শরীরে কাপড় না থাকলে যেমন খারাপ দেখাবে তেমন স্কুলে অ্যাসেম্বলি ক্লাস না করলে খারাপ দেখাবে। আর সরকার এখন স্কুলে বার্ষিক বরাদ্দ দিয়ে থাকে। তাছাড়া আমাদের নিদের্শনা থাকে সে বরাদ্দ থেকে হারমোনিয়াম, তবলা বা সাউন্ড সিস্টেম ক্রয় করে সুন্দরভাবে জাতীয় সংগীত বাজাতে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস আর ফারুক বলেন, অ্যাসেম্বলি ক্লাস বাধ্যতামূলক এখানে ঝড়, বৃষ্টি, রোদ, শীত কোন অজুহাত করা চলবে না। স্কুল হলেই অ্যাসেম্বলি ক্লাস হতে হবে। আমরা এ বিষয়ে আরো নজরদারী বাড়াবো। কোন স্কুল অ্যাসেম্বলি ক্লাস না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031998157501221