প্রথমে প্রকাশ পায় তার কবিতার বই, কিন্তু উপন্যাস, কিশোর সাহিত্য, প্রবন্ধের পাশাপাশি ভাষাতত্ত্বেও তার ছিল অগাধ বিচরণ। সমাজের মূল সমস্যাকে চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণের উপায় বাতলে দিতে তিনি কলম ধরেছিলেন চরম সাহসিকতার সঙ্গে। বহুমাত্রিক ও প্রথাবিরোধী লেখক, গবেষক ও ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদের ১৩তম মৃত্যুবাষির্কী আজ শনিবার। ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে তিনি মারা যান। ওই বছরই ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে একদল সন্ত্রাসী হুমায়ুন আজাদকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হুমায়ুন আজাদ সুস্থ হয়ে ওঠেন। ওই বছরের ৭ আগস্ট একটি গবেষণা বৃত্তি নিয়ে তিনি জার্মানি যান। এর পাঁচ দিন পর ১২ আগস্ট মিউনিখের নিজ ফ্ল্যাটে নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
লেখায় ধর্ম, মৌলবাদ, নারী ও রাজনীতি বিষয়ে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির জন্য হুমায়ুন আজাদ বিপুলসংখ্যক পাঠককে আকৃষ্ট করতে সমর্থ হন। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অলৌকিক ইস্টিমার’ প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। মূলত গবেষক ও প্রাবন্ধিক হলেও হুমায়ুন আজাদ ১৯৯০-এর দশকে একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল বিক্রমপুরের
রাঢ়িখাল গ্রামে জন্ম নেওয়া এ বহুমুখী মননশীল লেখক কর্মজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সভাপতি ছিলেন। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রবন্ধের বই ‘নারী’। এ বই প্রকাশের পর তিনি মৌলবাদীদের তীব্র রোষানলে পড়েন।
হুমায়ুন আজাদের মোট কাব্যগ্রন্থ সাতটি। এ ছাড়া তিনি গবেষণা গ্রন্থসহ শিশুতোষ গ্রন্থ রচনা এবং বেশ কয়েকটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন।
তার কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হন।