আধুনিক যুগেও ১০ বছরের দাসত্ব! - দৈনিকশিক্ষা

আধুনিক যুগেও ১০ বছরের দাসত্ব!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথা বাতিল করা হয়েছে প্রায় দেড়শ’ বছর আগে। কিন্তু, কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি অনেক শ্বেতাঙ্গের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায়নি এতদিনেও। সেখানে এখনো দেখা যাচ্ছে বর্বরতম দাসপ্রথার কালো ছায়া। এই আধুনিক যুগে এসেও এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কৃষ্ণাঙ্গকে ১০ বছর দাস বানিয়ে রেখেছেন এক শ্বেতাঙ্গ রেস্তোরাঁ ম্যানেজার। সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারোলিনার কনওয়ে শহরে ঘটেছে এমন অমানবিক ঘটনা।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ১০ বছর ধরে শ্বেতাঙ্গ ববি পল এডোয়ার্ডসের ‘জে অ্যান্ড জে ক্যাফেটেরিয়া’য় বিনা বেতনে সপ্তাহে ১০০ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন কৃষ্ণাঙ্গ জন ক্রিস্টোফার স্মিথ। বিভিন্ন সময় তাকে বেল্ট, রান্নার পাত্র বা হাত দিয়ে মারধরের অভিযোগ স্বীকার করেছেন এডোয়ার্ডস।

৩৯ বছর বয়সী স্মিথ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, তার আইকিউ ৭০-এর চেয়েও কম। দক্ষিণ ক্যারোলিনার জেলা আদালতে দায়ের করা এক অভিযোগে বলা হয়, একবার এডোয়ার্ডস লোহার চিমটা ফুটন্ত তেলে ডুবিয়ে স্মিথের ঘাড়ে ছ্যাঁকা দেন। এছাড়া তিনি প্রায়ই বর্ণবাদী ও বাজে ভাষায় গালাগালি করতেন স্মিথকে। 

চলতি বছরের নভেম্বরেই জোর করে দাস বানিয়ে রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এডোয়ার্ডসকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই সঙ্গে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে স্মিথকে ২ লাখ ৭২ হাজার ৯শ’ ৫২ মার্কিন ডলার দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় তাকে।

রায়ের পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর স্পেশাল এজেন্ট জোডি নরিস বলেন, এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে এভাবে দাস বানিয়ে দিনের পর দিন অত্যাচারের ঘটনা অত্যন্ত জঘন্য।

নাগরিক অধিকার বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক ড্রেইবান্ড বলেন, এই সময়ে এসেও এদেশে একজনকে জোর করে দাস বানিয়ে রাখা হচ্ছে, তা মেনে নেয়ার মতো না। দাসপ্রথা বিলুপ্তির দেড় শতাব্দী পর এমন ঘটনা অচিন্তনীয়। 

স্মিথ ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম জে অ্যান্ড জে ক্যাফেতে ডিশওয়াশার হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১২। প্রথমদিকে তাকে বেতন দেয়া হতো। তখন ক্যাফেটির মালিক ছিলেন এডোয়ার্ডসের ভাই। এডোয়ার্ডস ক্যাফের ম্যানেজার হওয়ার পর থেকেই স্মিথের ওপর নির্যাতন শুরু হয়।

স্মিথ বলেন, আমার সঙ্গে এডোয়ার্ডসের স্ত্রী, মা, বাবা, ভাই-বোন সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু, তার সঙ্গে কিছুতেই বনিবনা হতো না।

এডোয়ার্ডস ম্যানেজার হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে স্মিথের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। স্মিথকে রেস্তোরাঁর পেছনে একটি ছোট্ট ঘরে বসবাস করতে বাধ্য করেন তিনি।

ক্যাফের নিয়মিত খদ্দের ও একসময়ের কর্মী জিনেইন কেইন্স বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান। তিনি বলেন, একদিন স্মিথ রান্নাঘর থেকে এসে বারে কিছু খাবার নামিয়ে রাখে। সেসময় তার ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই।

কর্তৃপক্ষ জানার পর ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে স্মিথকে ওই রেস্তোরাঁ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু, ততদিনে ১৭ বছর হয়ে গেছে নির্যাতনের।

বর্ণবাদের বিপক্ষে কাজ করা সংগঠন দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব কালার্ড পিপল (এনএএসিপি) স্মিথকে সহযোগিতা করে। এখন তিনি কনওয়ের অন্য একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করছেন। 

স্মিথ বলেন, আমি অনেক আগেই সেখান থেকে চলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, আমার যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। পরিবারের কেউ, এমনকি মাকেও দেখতে যেতে পারিনি। তাকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল আমার।

এডোয়ার্ডসের ব্যবহার সম্পর্কে তার পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন বলেও অভিযোগ করেন স্মিথ। তিনি বলেন, তারা সবাই জানতেন তিনি আমার সঙ্গে কী করতেন। 

এডোয়ার্ডস ছাড়াও ভাই আর্নেস্ট এডোয়ার্ডস ও  তার রেস্তোরাঁ নিয়েও মামলা চলছে। ইতোমধ্যে নতুন ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া হলেও রেস্তোরাঁটি এখনো এডোয়ার্ডস পরিবারের মালিকানাধীন রয়েছে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043339729309082