মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় চাহিদা হচ্ছে তার জীবনকে বাঁচিয়ে রাখা। মানুষ মুখে হয়তো অনেক কথাই বলে, অন্য অনেক কিছুকেই অনেক গুরুত্ব দিয়ে ফেলে কিন্তু আসলে নিজের জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছুই নাই। তবে কিছু কিছু ব্যতিক্রম থাকবে, অন্য কিছুকেই গুরুত্ব দিয়ে ফেলতে পারে কিন্তু তার জন্য নিজের জীবন দেওয়া কতটা যৌক্তিক। সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে উত্তম দানই হচ্ছে আমাদের জীবন।
ইদানীংকালে দেখছি আত্মহত্যা অর্থাত্ নিজেকে হত্যা করার প্রয়াস খুব বেড়ে গেছে। আবার খোঁজ নিলে দেখা যাচ্ছে এদের মধ্যে অনেকেই ছাত্র তথা উঠতি বয়সী। এরা অধিকাংশই হতাশায় পড়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রথম কথা হচ্ছে সকল ধর্মই আত্মহত্যা শব্দটাকে ঘৃণা করে এবং এটা অবশ্যই মহাপাপ। এই পাপকে যারা লুফে নিবে তারা তো বিপথগ্রস্ত। কিন্তু কথা হচ্ছে আমরা হয়ত কোনো কিছু পাওয়ার আশা করি, তা না পেলেই নিজেকে বিলিয়ে দেই।
কিন্তু যদি নিজের জীবনই না থাকে তাহলে আর পাবোও বা কীভাবে! কিছু পেতে হলে তো নিজের বেঁচে থাকতে হবে আগে। আমরা আসলে বর্তমানকে খুব বেশি মূল্য দিয়ে ফেলি বলেই এসব হয়ে যায়। কিন্তু এই পৃথিবীতে এমন কোনো কষ্টই নাই যার জন্য নিজেকে শেষ করে দিতে হবে। আর করে দিয়েও কি আর পাওয়া যাচ্ছে! পৃথিবীতে কত মানুষ একবেলা খেতে পারছে না, একটু ঘুমানোর জায়গা পাচ্ছে না।
তাদের কথা ভাবলে বুঝবো যে এদের চেয়ে আমরা ভালো আছি। অবশ্যই সামনে ভালো আসবে অর্থাত্ সুন্দর ভবিষ্যতের কল্পনা করে আমরা বর্তমানের বাজে সময়কে কাটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি। আর যারা খুব হতাশ হয়ে পরে তাদের পারিপার্শ্বিকতা তাকে আরো বেশি এই জঘন্য কাজের দিকে ঠেলে দেয়। আশপাশে যারা থাকবে তারা অবশ্যই ঐ হতাশ ব্যক্তির পাশে দাঁড়াবে এবং সমস্যাগুলো শেষ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিবে, এমনটাই হওয়া উচিত।
অনেকসময় দেখা যায় হতাশাগ্রস্ত মানুষকে পারিপার্শ্বিকতা আরো বেশি বাজে মনোভাবের দিকে ধাবিত করে। সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তা আমাদের একটি সুন্দর জীবন দিয়েছেন এবং লড়াই করার সকল সুযোগ দিয়েছেন। আমরা লড়াই করে বাঁচবো কিন্তু আত্মসমর্পণ করে কেন মরবো!? অবশ্যই এই সুন্দর জীবনের সুন্দরতম জায়গায় আমরা পৌঁছাবো কিন্তু পৌঁছানো পর্যন্ত তো অপেক্ষা করবো!
লেখক:শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: ইত্তেফাক