ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ঝালকাঠীর নলছিটিতে লাইজু আক্তার নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ইউপি চেয়ারম্যানের নাম মাসুদুর রহমান ছালাম। তিনি নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
মঙ্গলবার (১৩ই ফেব্রুয়ারি) এসএসসির ইতিহাস বিষয়ের পরীক্ষাশেষে বিকেলের দিকে ঝালকাঠি শহরের চাঁদকাঠি চৌমাথার একটি কক্ষে চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ছালামের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে এসএসসি পরীক্ষার্থী লাইজু আক্তার (১৬)।
লিখিত বক্তব্যে লাইজু আক্তার বলেন, রানাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ছালাম বিগত ৬/৭ বছর পুর্বে বিয়ে করে কিন্তু তার অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে সেই স্ত্রী অন্যত্র চলে যায়। এর ফলে ওই চেয়ারম্যান লাইজু আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের বয়স বেশি হওয়ায় তার পরিবার বিয়েতে রাজী হয়নি। এছাড়া চেয়ারম্যান সালাম লাইজুর চাচাত বোন ১০ম শ্রেণির ছাত্রী সায়লা আক্তারকেও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সায়লাও এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে।
এর পর চেয়ারম্যানের লাঠিয়াল বাহিনী এমনকি গ্রাম্য পুলিশ তাদের বাড়িতে এসে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়। এর কিছুদিন পর পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ ডেবরা গ্রামের মৃত. আব্দুল আজিজ মোল্লার ছেলে ব্যবসায়ী ইউনুস মোল্লার সাথে বিয়ে দেয়। এতে চেয়ারম্যান ছালাম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে লাইজু আক্তারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। তখন ঘরে থাকা ষাটোর্ধ্ব নেহার বেগমকে মারধর করে লাঞ্ছিত করে বলে লাইজু আক্তার জানায়।
ওই দিনই রাত ৯ টার দিকে পুনরায় লাইজুকে তুলে নেওয়ার লক্ষ্যে চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ছালাম নিজে তার লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে বসত ঘরের সামনে এসে লাইজুর স্বামী ইউনুস মোল্লাকে খুঁজতে থাকে। চেয়ারম্যান লাইজুর স্বামী ইউনুস মোল্লাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো অথবা হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিয়ে বাড়ি ত্যাগ করে। তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতেও নিষেধ করা হয়। যদি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায় তাহলে লাইজুসহ পরিবারের লোকজনদের শেষ করে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকি দেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে লাইজু।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিক্ষার্থী লাইজুর মা ফিরোজা বেগম ও স্বামী ইউনুস মোল্লা।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান ছালামের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মো. জোবায়েদুর রহমান বলেন, ‘এসএসসি পরীক্ষার্থী লাইজু আক্তারকে আইনি সহযোগিতা প্রদান করা হবে।