কিশলয় বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বই মেলায় - দৈনিকশিক্ষা

কিশলয় বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বই মেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক |

একুশের বই মেলায় দলবেধেঁ গেল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে অভিভাবক নয়, স্কুল কর্তৃপক্ষই শিক্ষার্থীদের নিয়ে যায় বইমেলায় । শুক্রবার (২৩শে ফেব্রুয়ারি) ছুটের দিনে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে বইমেলায় হাজির হন কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্‌।

এসময় তিনি মেলায় শিক্ষার্থীদের নতুন বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। দিনটি শুক্রবার হওয়ায় বিভিন্ন কবি-লেখকদের মেলায়ই দেখতে পায় শিক্ষার্থীরা। প্রিয় লেখকদের কাছে পেয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের নানা প্রশ্ন করে। তারা যেন এক অজানা পৃথিবীতে প্রবেশ করে। সব শিক্ষার্থীই একাধিক বই কিনে বাড়ি ফিরে। অধ্যক্ষ নিজেও শিশুদেরকে বইমেলা ও বিভিন্ন লেখকদের ব্যাপারে বর্ননা দেন।

মেলায় আগত শিক্ষার্থীদের সাদরে বরণ করে নেন দেশের খ্যাতনামা লেখক মোজাম্মেল হক নিয়োগী। এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের ব্যাপারে মোজাম্মেল হক নিয়োগী বলেন, ‘বই মেলায় আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরনীয় দিন হচ্ছে আজকের দিনটি। একসঙ্গে একই ব্যানারে এত শিক্ষার্থী পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমি চাই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক, অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্‌র এই উদ্যোগ।

শিক্ষার্থীরা এর আগে কখনও এভাবে দলবদ্ধভাবে মেলায় আসেনি, তাই তারা ছিল বেশ কৌতুহলি এবং হাস্যোজ্ঝল। এ সময়ে তারা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ইউনিফর্‌ম পরিধান করেছিল। তাদের প্রত্যেকের মাথায় ছিল প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্লোগান ‘শ্রেষ্ঠ মাতা, শ্রেষ্ঠ জাতি। ত্বরান্বিত অগ্রগতি’ লেখা ক্যাপ। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মুখে ও বুকে ছিল, ‘ভালো বই পড়বো, ভালো জীবন গড়বো।’ ‘লেখাপড়া ছাড়বো না, ভালো কাজে হারবো না।’…ইত্যাদি স্লোগান। শিক্ষার্থীরা হৈ-হুল্লোড় করে মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখে। তারা প্রত্যেকেই বইমেলা থেকে বই কেনার উদ্দেশ্যে কমপক্ষে ২০০ (দুইশত টাকা) সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল। কেউ কিনেছে ভুতের গল্প, কেউ কিনেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমার ছেলেবেলা আবার কেউ কিনেছে কৌতুকের বই। কেউ কিনেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই। কারও পছন্দ সাইন্স ফিকশনের বই। কারও পছন্দ গোয়েন্দা কাহিনী। পছন্দের তালিকা হতে বাদ পড়েনি উপন্যাস বা কবিতার বইও।

এই দিনে বইমেলায় উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুসারে শিশু চত্ত্বরে গিয়ে তিনি কিশলয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হন। শিক্ষার্থীরা তাদের কেনা বইয়ের পাতায় জাফর ইকবাল স্যারের অটোগ্রাফ নেবার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে এত সংখ্যক শিক্ষার্থী বই মেলায় নিয়ে আসার জন্য কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ-এর অধ্যক্ষকে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল সাধুবাদ জানান। শিক্ষার্থীদের সাথে তিনি সৌজন্য বিনিময় করেন।

এদিকে ভিড় বাড়তে থাকলে অধ্যক্ষ রহমত উল্লাহ্‌ মুহম্মদ জাফর ইকবালকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে কিছু উপদেশ দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে শুধুমাত্র একটি উপদেশ দেন- ‘তোমরা ভাল বই পড়।’ তিনি কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি কথা দিচ্ছি তোমাদের প্রতিষ্ঠানে আমি যাব। তোমাদের সঙ্গে সেখানে মন খুলে কথা বলবো। আজ তোমাদেরকে আমি অটোগ্রাফ দিব না। তোমাদের প্রতিষ্ঠানে যেয়ে আমি তোমাদের সবাইকে অটোগ্রাফ দিব।

শুক্রবারের এই দিনে অনেক লেখককেই মেলায় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। প্রিয় লেখকদের কাছে পেয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের নানা প্রশ্ন করে। তারা যেন এক অজানা পৃথিবীতে প্রবেশ করে। জাতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুতোষ লেখক জনাব আহমেদ রিয়াজের সাথে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মহোদয়। আহমেদ রিয়াজ কিশলয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে আনন্দঘন সময় কাটান, অটোগ্রাফ দেন ও ভুতের বইয়ের গল্প করেন।

কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্‌ বলেন, পাঠ্যবইয়ের বাইরেও যে আরেকটা জগত আছে আমি শিক্ষার্থীদের চিনাতে চাই। এজন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানে সবসময়ই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর ব্যতিক্রম আয়োজন হিসেবেই আমি শিক্ষার্থীদের বই মেলায় নিয়ে এসেছি। শুধু শিক্ষার্থীরাই নয় সব শিক্ষকও এসেছে।

তিনি বলেন, কিছু শিক্ষার্থীর বাবা-মা তাদের সন্তানকে বইমেলায় নিয়ে যায়। বই কিনে দেয়। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই বইমেলায় যাওয়ার সুযোগ হয় না। তাই আমি সবাইকে বইমেলায় নিয়ে এসেছি। কবি-লেখক ও নতুন বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করে দিয়েছি।

রহমত উল্লাহ্‌ আরও বলেন, আমাদের এই আয়োজন দেখে অন্য প্রতিষ্ঠানও যদি তাদের শিক্ষার্থীদের মেলায় নিয়ে আসে তাহলে আমাদের এই উদ্যোগ সার্থক হবে। শিক্ষার্থীদের শপথ ছিলো- লেখাপড়া ছাড়বো না, ভালো কাজে হারবো না।

ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039029121398926