সম্প্রতি সারা দেশে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ২০১২ সালে করা সরকারের নীতিমালা বৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ নীতিমালার অধীনে শিক্ষকরা কোনো কোচিং সেন্টারে পড়াতে না পারলেও সহায়ক ক্লাসের নামে বাধ্যতামূলক প্রাইভেট থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পাচ্ছে না।
নীতিমালার ২ নম্বর ধারা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষেই সহায়ক ক্লাসের নামে শিক্ষকদের প্রাইভেট ক্লাস নেওয়া আরো সহজ হয়ে গেল। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষকদের কাছে জিম্মি অবস্থায়ই রয়ে গেল। সহায়ক ক্লাসের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে মাসে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দিতে হবে। এ থেকে শিক্ষার্থীরা কতটুকু সহায়তা পাবে, তা নিশ্চিত নয়।
যে শিক্ষক নিয়মিত ক্লাসেই ঠিকমতো পড়াতে বা বোঝাতে পারেন না, সেই শিক্ষকের কাছে বাধ্য হয়েই সহায়ক ক্লাসও করতে হবে। এ নীতিমালার সুযোগে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া বা ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শিক্ষকরা তাঁদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করতে পারবেন। এতে নীতিমালার কারণে শিক্ষার্থীদের পছন্দমতো কোনো ভালো শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়ার স্বাধীনতাও থাকছে না। কারণ সহায়ক ক্লাসের বেতন পরিশোধ করে বাড়তি প্রাইভেট শিক্ষক রাখার মতো আর্থিক সক্ষমতা বেশির ভাগ অভিভাবকেরই নেই। এ জিম্মি অবস্থা থেকে দেশের শিক্ষার্থীরা মুক্তি চায়। বাড়তি আয়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাসের আগে বা পরে শিক্ষকদেরও প্রাইভেট পড়ানোর অধিকার রয়েছে। তবে তাঁরা যাতে কোনো অবস্থায়ই নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে সহায়ক ক্লাসের নামে প্রাইভেট পড়াতে না পারেন, এমন বিধান থাকা প্রয়োজন। শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষামন্ত্রী যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশা করি। কোমলমতি শিশু-কিশোরদের কোচিং সংস্কৃতি মেধা বিকাশে সহায়ক নয়, এটা আমাদের অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে।
গোয়ালচামট, ফরিদপুর।