জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ত্রুটিপূর্ণ বই সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১ জানুয়ারি নতুন বছরের প্রথম দিনে বই উত্সব থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পেয়ে নতুন উদ্যোমে পড়ালেখার প্রস্তুতি শুরু করে। কিন্তু প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রায় দুই হাজার পাঠ্য বইয়ে বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ বই পেয়ে বছরের শুরুতে ক্লাসে এসে তাদের হোঁচট খেতে হচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থীর পড়ালেখা কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণির পাঁচশ বাংলা বইয়ের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির বাংলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ইংরেজি দুইশ বইয়ের মধ্যে প্রথম এক থেকে ১২ পৃষ্ঠা নেই। প্রথম শ্রেণির তিনশ গণিত বইয়ে এক ও দুই পৃষ্ঠা নেই। দ্বিতীয় শ্রেণির দুইশ গণিত বইতে জ্যামিতির অধ্যায় নেই। তৃতীয় শ্রেণির দুইশ বাংলা বইয়ে এক থেকে সাত পৃষ্ঠা নেই। চতুর্থ শ্রেণির দুইশ বাংলা বইয়ে এক থেকে ১০ পৃষ্ঠা নেই। পঞ্চম শ্রেণির একশ ইংরেজি বইতে ৪৪ থেকে ৭৮ পৃষ্ঠা নেই। পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইতে ৩০ থেকে ৪০ পৃষ্ঠা নেই। একই বিষয়ের একশ বইতে ৯১ থেকে ৯৮ পৃষ্ঠা নেই।
উপজেলার বাগান উত্তরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিউ সাহা জানায়, তার বাংলা বইয়ে প্রচ্ছদ উল্টো। তার ক্লাসের আরও কয়েক জনের বাংলা বইয়ের একই অবস্থা। এছাড়া সহপাঠী জয়িতা রত্নর বাংলা বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা আঠা দিয়ে লাগানো। পৃষ্ঠা খুলছে না। এতে নতুন বই পাওয়ার আনন্দে ভাটা পড়েছে। এখন তাদের মন খারাপ।
একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ফারুক হোসেন জানায়, তার বাংলা বইয়ের প্রথম ছয় পৃষ্ঠা নেই। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র তন্ময় বাকচী জানায়, তার বাংলা বইয়ের প্রথম সাত পৃষ্ঠা নেই। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সুজিত্ বিশ্বাস জানায়, তার বাংলা বইয়ে ৮৬ থেকে ১০৩ পৃষ্ঠা নেই। এ অবস্থায় তাদের বছরের প্রথম দিকের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করে।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাঞ্চন রত্ন বলেন, ত্রুটিপূর্ণ বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের জানায়। এ বইয়ের কারণে বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বইতে ত্রুটি রয়েছে। আরও বইতে ত্রুটি রয়েছে বলে বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে খবর পাচ্ছি। বিষয়টি আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। সরবরাহকারীরা ত্রুটিপূর্ণ এসব বই ফিরিয়ে নেবে।