কোটি টাকার মিশনে কলারোয়ায় গাইড বই কোম্পানির প্রতিনিধিরা - দৈনিকশিক্ষা

কোটি টাকার মিশনে কলারোয়ায় গাইড বই কোম্পানির প্রতিনিধিরা

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ |

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন বছরের নতুন শ্রেণিতে ওঠা আর নতুন বইয়ের উৎসব সবকিছু ম্লান করে দিচ্ছে কতিপয় গাইড বই কোম্পানী আর উপজেলার কিছু শিক্ষক নামের ব্যবসায়িরা। নতুন বছরের শুরুতে নতুন বই সরবরাহ করার সঙ্গে সঙ্গে লিখে দেওয়া হচ্ছে এই বই পড়ার জন্য সহায়ক হিসাবে এই গাইড অবশ্যই কিনতে হবে। গাইড বই না কিনলে তারা পড়া বুঝতে পারবে না এমনকি অকৃতকার্য হওয়ার ভয় পর্যন্ত দেখানো হচ্ছে।প্রতি বছরের শুরুতে শুরু হয় শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের মধ্যে গাইড আতঙ্ক। গাইড সিন্ডিকেটে যুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতি, ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষক,পুস্তক ব্যবসায়ী

কলারোয়া উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ নোট-গাইড কোম্পানির সাথে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে।উপজেলার ৪৮টি মাধ্যামিক পর্যায়ের বিদ্যালয় গুলোতে বিভিন্ন বই কোম্পানির প্রতিনিধিরা আগামী ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম  শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নোট-গাইড ও ব্যাকরন সহ অন্যান্য বই শিশুদের কেনার জন্য চাপ প্রয়োগের চুক্তিতে শিক্ষক ও গাইড বই কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে কলারোয়া বাজারের একজন বিশিষ্ট বই ব্যবসায়ি জানান- উপজেলার স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটর মাধ্যমে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সাথে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এ সব নোট বই, গাইড ও কোম্পানির তৈরী করা সিলেবাস কিনতে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে ।

কলারোয়া উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,উপজেলার ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনুপাতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে জননী প্রকাশনী, হাসান বুক হাউজ, পাঞ্জেরী, জুপিটার ও পপি কোম্পানির জেলা ম্যানেজারদের সাথে এ সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলার বইয়ের দোকানীকে ম্যানেজ করে মোটা অংকের চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিন্ম মানের এ নোট বই ও গাইড শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করবে। তারা আরো জানান, প্রতি বছর প্রকাশ্যে টাকার বিনিময়ে এ ধরণের শিক্ষা বানিজ্য হলে ও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না এবং সাংবাদিকরা কোন ও খবর প্রকাশ করেনা বলে তারা আক্ষেপ করেন।

খোদ উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে উপজেলার বিভিন্ন বইয়ের দোকানে নিন্ম মানের গাইড কেনার জন্য শিক্ষার্থীসহ অবিভাবকদের ভীড় করছে।অথচ এসব বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কোন ও খোজ রাখেন না। চুক্তিবদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্লিপ আকারে কাগজে লিখে দেয়া হয় নির্দিষ্ট নোট বই ও গাইড ছাড়া অন্য কোন কোম্পানির বই কিনতে পারছে না অভিভাবকরা।

বই কিনতে আসা উপজেলার জিকেএমকে মডেল পাইলট হাইস্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কলারোয়া পৌর সদরের আলম জানান, স্কুল থেকে তালিকা দেয়া পাঞ্জেরী কোম্পানির বই ও গাইড ছাড়া অন্য কিছু কেনা যাবে না সে জন্য বাধ্য হয়ে দাম বেশী ও নিন্ম মানের হলে ও এসব বই কিনতে বাধ্য হচ্ছি।তিনি আর ও জানান স্কুল থেকে বইয়ের দাম এবং কোন লাইব্রেরী থেকে বই কিনতে হবে সেটা ও শিক্ষকরা তার মেয়ের কাছে লিখে দিয়েছেন।

উপজেলার চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুরারিকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,কলারোয়া মডেল হাইস্কুল,খোরদো সালেহা হক বালিকা বিদ্যালয়, কামারালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়,দেয়াড়া মাধ্যমিক,যুগিখালী নিম্ন-মাধ্যমিক,সরসকাটী বালিকা বিদ্যালযের কয়েকজন শিক্ষক জানান, জননী প্রকাশনী কলারোয়াতে মোট ২২ বিদ্যালয়ের সাথে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকরা চল্লিশ লক্ষ টাকায় নিন্ম মানের বই ও গাইড শিক্ষার্থী চালানোর জন্য মৌখিক চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।এ ছাড়া উপজেলার অন্যান্য স্কুলের সাথে হাসান বুক হাউজ,পাঞ্জেরী, পপি ও সংসদ কোম্পানির বই ও গাইড চালানোর জন্য মোটা অংকের টাকার চুক্তিবদ্ধ কয়েছে।

এসব স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে জানান, সংশ্লিস্ট স্কুলের শিক্ষকরা জননী প্রকাশনীর, সংসদ নিন্ম মানের গাইড,নোট বই ও সিলেবাস কোম্পানীর সাথে কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় চড়া মূল্যে শিক্ষার্থীদের এসব নিষিদ্ধ ব্যাকারণ, গ্রামারসহ বিভিন্ন গাইড বই কিনতে বাধ্য করছেন।

মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037598609924316