টাকা ছাড়া বই মিলছে না শেরপুরে! - Dainikshiksha

টাকা ছাড়া বই মিলছে না শেরপুরে!

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি |

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বিনামূল্যের সরকারি বই বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের সরকারি বই দেওয়া হচ্ছে না।

এদিকে বিনামূল্যের সরকারি বই না পেয়ে উপজেলার খামারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সরোয়ার জাহান বলেন, টাকার বিনিময়ে বিনামূল্যের এসব সরকারি বই দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, সারাদেশে সরকারিভাবে বছরের প্রথমদিন পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই উপজেলাতেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বই বিতরণে অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়। ফলে উৎসবের দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। এমনকি বিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত সেশন ফি ও বেতনের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এখনও অনেক শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের সরকারি বই দেওয়া হয়নি। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের একটা অংশ বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করে বই নিতে পারলেও দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীরা এখনও বই পাননি বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।

খামারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন, সাদিয়া আকতার, সাজ্জাদ হোসন, সৈকত হোসেন, মেহেদী হাসান, সোলায়মান আলী জানান, বিদ্যালয়ের নির্ধারিত সেশন ফি ও বেতনের ৬০০টাকা দিতে না পারায় তারা এখনও নতুন বই পাননি। দু’একজন ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া তাদের বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী নতুন বই না পেয়ে মনে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন। এছাড়া নতুন বছরের প্রথমদিনে অনেক শিক্ষার্থী বই না পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে গেছেন বলেও তারা জানান।

অভিভাবক হোসেন আলী, কামাল মিয়া ও সোলায়মান আলী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের ছেলে-মেয়েরা ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। জনপ্রতি ৬০০টাকা করে না দেওয়ায় তাদের বই দেওয়া হয়নি। এছাড়া ভর্তির নামেও অতিরিক্ত আরও ৪০০ টাকা দাবি করা হয়েছে বলে তারা জানান।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য বাদশা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষকের একক সিদ্ধান্তে টাকা ছাড়া বই দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া বিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত টাকা আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের সরকারি বই না দেওয়া ঠিক হয়নি বলে তিনি মনে করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খামারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীফ উদ্দিন জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৩১ডিসেম্বর বার্ষিক ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের বকেয়া সেশন ও ভর্তি ফি এবং বেতনের টাকা পরিশোধের জন্য বলা হয়। কিন্তু অনেকেই বকেয়া পরিশোধ করলেও কতিপয় ছাত্র-ছাত্রীরা করেন নি। এাছাড়া অনেক ছাত্ররা বই নিয়ে গেলে আর স্কুলে আসেন না। মাসিক বেতন ও সেশন ফি দেন না। তাই বই দেওয়ার আগে তাদের কাছ থেকে ফিগুলো আদায় করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অথচ ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি কু-চক্রী মহল নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিশেষ করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জের ধরে তার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র চলছে বলে এই প্রধান শিক্ষক দাবি করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বছরের প্রথমদিনেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। সে মোতাবেক সব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যের সরকারি এসব বই দিতে হবে। বিদ্যালয়ের বেতন, সেশন ফিসহ অন্যান্য টাকার জন্য সরকারি বই না দেওয়া একটা বড় অন্যায়। তাই অভিযোগটি তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেন তিনি।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064148902893066