মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার চেয়ারম্যান পদে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কয়েকজন অধ্যাপক। এঁদের মধ্যে তদবিরে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন অধ্যাপক বনমালী মোহন ভট্টাচার্য্য। তিনি বি সি এস সপ্তম ব্যাচের কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ পদে রয়েছেন।
একাধিক সূত্রমতে, বনমালীকে বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে পছন্দ করছেন সেগুনবাগিচার একটি প্রভাবশালী অফিসের চেয়ারম্যান। এই অফিসটি ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষাখাত সংশ্লিষ্টদের কাছে সর্বাধিক আলোচনায় থাকবে। তাই এই অফিসের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন শিক্ষা প্রশাসনের একজন শীর্ষ ব্যক্তি।
জানা যায়, ঢাকা বোর্ডে রয়েছে শত শত কোটি টাকার ফাণ্ড। বর্তমানে বোর্ডটি শিক্ষামন্ত্রীর সাবেক এপিএস ও বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির মহাসচিবের নিয়ন্ত্রনে। গত কয়েকবছরে তারা বোর্ডটির পরিবেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। আর সচিবালয়ের ৬ নং ভবনের ১৯ তলায় বসে এদেরকে সমর্থন দেন জামাতপন্থী একজন অতিরিক্ত সচিব, যিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ছাত্র-শিবিরের রাজনীতির সমর্থক ছিলেন। এই অতিরিক্ত সচিবের শিক্ষা ক্যাডারে প্রবেশকালে ও পদোন্নতিতে জামাত-বিএনপি নেতাদের আর্শীবাদ ছিলো।আবার অতিরিক্ত সচিব হতে কাজে লাগাতে পেরেছেন একজন সাবেক কমিউনিস্ট ও বর্তমান আওয়ামী লীগ রাজনীতিককে। শিক্ষা ক্যডারের বিএনপি-জামাতপন্থীদের উসকে দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের কলেজ জাতীয়করণের উদ্যোগ বাধাগ্রস্থ করার অভিযোগ এই অতিরিক্ত সচিবের বিরুদ্ধে। এই ত্রিরত্নের পছন্দের একজন বিজ্ঞান কলেজের অধ্যাপক বনমালী। চলতি অর্থ বছরে ৫০ কোটি টাকার কেনাকাটা রয়েছে ঢাকা বোর্ডে। বনমালী তাদের কথা শুনবেন বলে নিশ্চিত হয়েছেন অনেকেই।
তবে, একইসঙ্গে দুইদিকে খেলতে সব্যসাচী অতিরিক্ত সচিব খুলনার একটি কলেজের অধ্যক্ষকেও আশ্বাস দিয়েছেন চেয়ারম্যান পদটি দেয়ার। ওই কলেজের প্রধান সহকারিকে টেলিফোনে আদেশ দিয়ে বলেছেন কলেজটির ইংরেজি বিভাগের প্রধানকে কলেজের হিসাব-নিকাশ বুঝিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি গ্রহন করতে। আওয়ামী লীগ মনস্ক খুলনার ওই কলেজ অধ্যক্ষ এর আগে ঢাকা বোর্ডের একটি বড় পদে ছিলেন। তার সময়ে ক্যামব্রিয়ান, মাইলস্টোনসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে জিপিএ ফাইভের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যায়। নজিরবিহীনভাবে তিনি ক্যামব্রিয়ানের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। ক্যামব্রিয়ানের কাছ থেকে সুবিধা নিতে যৌথভাবে কাজ করেন ঢাকা বোর্ডের সেই সময়ের উপ-সচিব কামাল উদ্দিন হায়দার। দৈনিকশিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। বদলি করা হয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে।
এছাড়াও ‘রাজার কুটুমে’র পছন্দের একজন অধ্যক্ষকেও চেয়ারম্যান বানানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা যায়। পদ্মার ওপারের ওই অধ্যক্ষ ইতিমধ্যে ঢাকা বোর্ড রেকি করেছেন। আরেক ‘রাজা’র ভাগ্নের সানুগ্রহ আদায়ে চেষ্টিত একজন অধ্যক্ষও চেষ্টা করছেন চেয়ারম্যান হওয়ার। এ ছাড়াও কাছে থেকে কাছে যেতে চান আরেক চেয়ারম্যান।