ঢাবিতে সরকারপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে কেন এই কোন্দল - Dainikshiksha

ঢাবিতে সরকারপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে কেন এই কোন্দল

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগের প্রশ্নে সরকার সমর্থক শিক্ষকদের দু’টি গোষ্ঠী প্রকাশ্য বিরোধ এবং বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।

গত ৮ বছরের বেশি সময় ধরে উপাচার্যের দায়িত্ব থাকা অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বিশ্ববিদ্যালয় সেনেটের মাধ্যমে আবারও উপাচার্য নিযুক্ত হওয়ার জন্য তিন সদস্যের একটি প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন।

কিন্তু সরকার সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি গোষ্ঠী সেনেটের নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করার পর নূতন উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়াটি স্থগিত হয়ে গেছে।

মি. সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন চার বছর।

এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি উপাচার্য নির্বাচিত হয়ে চার বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন।

এখন আবার উপাচার্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলে সরকার সমর্থক শিক্ষকরা অধ্যাপক সিদ্দিকের পক্ষে এবং বিপক্ষে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নিয়েছেন।

এর আগে সেনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি এবং শিক্ষক সমিতি নির্বাচনের সময়ও তারা বিভক্ত হয়ে পড়েছিলো। সেসময় তাদের দ্বন্দ্ব মেটাতে প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। এখন আবার তারা প্রকাশ্যেই মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।

উপাচার্য মি. সিদ্দিকের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া শিক্ষকদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেছেন, সব পক্ষের প্রতিনিধি না নিয়ে সেনেট পূর্ণাঙ্গ না করেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করায় প্রশ্ন উঠেছে।

“মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শিক্ষকদের আহবায়ক কমিটি সেনেটের জন্য কয়েকজন শিক্ষককে মনোনীত করেছিল। সেই মনোনয়ন বাতিল করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্রমাগতভাবে দু’টি ধারায় বিভক্ত হয়ে যায়। প্রশাসন তাতে নজর না দেয়ায় আজকে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল আরও বলেছেন, “শিক্ষক নিয়োগের বিষয় যেনো পরিচ্ছন্ন হয়, সেটা আমরা বিভিন্ন সময় সিন্ডিকেটে বলেছি। আমাদের কথা আমলে নেয়া হয়নি। সেকারণে এখন এগুলো সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত গড়াচ্ছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত আট বছরে নতুন নতুন বিভাগ চালু করে ৯০৭জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে এবং অভিযোগ উঠেছে যে অনিয়ম করা হয়েছে অনেক নিয়োগের ক্ষেত্রে।

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের উপাচার্য-বিরোধী অংশটি আদালতের আশ্রয় নিয়েছে। তারপর আদালত উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয়।

শিক্ষকদের অন্য অংশটি উপাচার্য-বিরোধী তৎপরতাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করছেন। শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ভূঁইয়া মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

“এককভাবে উপাচার্যকে দায়ী করলে, এটা খণ্ডিত হবে। কারণ যারা সিন্ডিকেটে বসেন, তাদের সকলেরই দায় থাকে। তবে যে অনিয়মের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেগুলো একটি একটি করে বিচার করলে, কোনটিই ধোপে টিকবে না।”

সিনিয়র শিক্ষকদের অনেকে বলেছেন, বর্তমান উপাচার্য নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে শিক্ষকদের এবং প্রশাসনের বড় পদগুলোতে পছন্দের ব্যক্তিকেই জায়গা দিয়েছেন। সেকারণে স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকট রূপ নিয়েছে। এবং এখন তার প্রকাশ ঘটছে।

প্রবীণ শিক্ষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, স্বার্থ-দ্বন্দ্ব থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসরুদ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

“সমস্যার উৎস মূলে রয়ে গেছে প্রশাসনের অতিমাত্রায় রাজনীতিকীকরণ। সরকারি দলের মধ্যেই বিভাজন। যারা রিট করেছেন তারা সরকারি দলেরই সমর্থক। আর ভিসি প্যানেল নির্বাচনের বিষয়ে আদালতে যাওয়াটা অত্যন্ত লজ্জাজনক।”

এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক।

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক তাদের নিজস্ব স্বার্থে সিনেট নির্বাচন নিয়ে যেসব কথা বলছেন, তারা সেগুলো পত্রপত্রিকাতেও বলছেন। আমাদের সিনেট ও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করেই শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।”

তবে শিক্ষকরা যে বিরোধে জড়িয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তার মীমাংসা কিভাবে হবে তা নিয়ে সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।

সৌজন্যে: বিবিসি

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040299892425537