কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পরিবহন সংকটে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লেও বাড়েনি যানবাহনের সংখ্যা। অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৮টি এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) থেকে ভাড়ায় চালিত ১০টি বাস রয়েছে পরিবহন পুলে। নিজস্ব বাসের মধ্যে শিক্ষকদের জন্য ৩৬ আসনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ২টি এবং কর্মকর্তাদের জন্য ১টি, কর্মচারীদের জন্য ১টি চেয়ার কোচ রয়েছে। নিজস্ব ৪টি এবং ভাড়া করা ১০টি বাসসহ ১৪টি বাস শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ, যা সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য অপ্রতুল। এর মধ্যে চালক না থাকায় ১টি বাস দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত রয়েছে। পরিবহন পুলের জন্য বাস ও চালক সংকট রয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
তা ছাড়া, শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যবহার করা প্রায় সব বাসেরই ফিটনেস নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস স্বল্পতার কারণে বিআরটিসি’র ভাড়া করা ১০টি বাসের সবগুলোই চলাচলের অনুপযোগী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, বিআরটিসি’র যে সব বাস ত্রুটিপূর্ণ ও মহাসড়কে চলাচলের অনুপযোগী সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহনে আনা হয়েছে। প্রায়ই কোনো না কোনো বাস মাঝপথে বিকল হয়ে যাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া বিআরটিসি’র চালকদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গতিতে বাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। জানা যায়, গত ১০ জুলাই ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে বিআরটিসি’র একটি বাস চাপা দেয় ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মাহামুদুল হাসানকে। এর আগে গত ২৯ মার্চ ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কোটবাড়ীর গন্ধমতি এলাকায় বিআরটিসি’র একটি বাসকে থামতে সংকেত দেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দিন। চালকের খামখেয়ালির কারণে বাসের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন ওই শিক্ষার্থী।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা করিম বলেন, ‘এমনিতেই ভিড়ের মধ্যে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। তার ওপর বেপরোয়া গতির কারণে বিড়ম্বনা ও ঝুঁকি বাড়ায়।’ অপরদিকে, শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্যাম্পাস এবং শহরমুখী বাসের ব্যবস্থা নেই। ফলে সাপ্তাহিক ছুটিতে ক্যাম্পাসমুখী বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন কমিটির আহ্বায়ক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব পরিবহনের স্বল্পতা রয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার চেষ্টা চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের দেওয়া ১টি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা ১টি বাস পরিবহনে যুক্ত হবে।’ তিনি আরও জানান, বিআরটিসির চালকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগও আমলে নেওয়া হচ্ছে।