নওগাঁ সরকারি কলেজে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে কলেজ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বহিরাগত দুজন নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং রানা হোসেন রনি চিকিত্সা নিয়ে হোস্টেলে আছেন।
আহতরা হলেন— নওগাঁ সরকারি কলেজের কাজী নজরুল ইসলাম হোস্টেলের মনিটর রানা হোসেন রনি (২৩) এবং বহিরাগত ফাহিম ফয়সাল সোহান (২০) ও চট্টগ্রাম হাটহাজারি কিতাম খানার ছাত্র মেহেদী হাসান (১৮)। ছুরির আঘাতে সোহানের পিঠের তিন জায়গায় ও মেহেদীর ডান পাশে ও পিঠে জখম হয়েছে।
কলেজ হোস্টেল সূত্রে জানা যায়, বহিরাগতরা হোস্টেলের সামনে নিয়মিত সন্ধ্যা থেকে রাত ৯-১০টা পর্যন্ত তাস খেলা, গাঁজা খাওয়া ও আড্ডা দিতেন। এ নিয়ে হোস্টেলের পক্ষ থেকে তাদেরকে কয়েকবার নিষেধ করা হয়। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। রবিবার সন্ধ্যায় হোস্টেলের সামনে স্থানীয় পিয়াল, মৃদুল ও সোহানসহ কয়েকজন তাস খেলা ও গাঁজা খাচ্ছিলেন। হোস্টেলের দর্শন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল বারিক তাদেরকে উঠে যেতে বলেন। কিন্তু তারা উত্তেজিত হয়ে আব্দুল বারিককে চড় থাপ্পড় মারেন।
পরে তিনি হোস্টেলের অন্য ছাত্রদের এবং মোবাইল ফোনে মনিটর রানাকে বিষয়টি জানান। মনিটর রানা গিয়ে তাদের কাছে চড় থাপ্পড় দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে তার পেটে চাকু দিয়ে আঘাত করেন। এতে রানা আহত হন। ঘটনার পর থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া বহিরাগতরা বাহির থেকে হোস্টেলের দিকে পেট্রোল জ্বালিয়ে ছুড়ে মারেন। ফলে আতঙ্ক দেখা দেয়।
ইতিপূর্বে কয়েকবার বহিরাগতসহ স্থানীয়দের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হোস্টেলের ছাত্রদের মারপিটের ঘটনা ঘটে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয় নিয়ে ক্যাম্পাসে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প করতে বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অধ্যক্ষ অধ্যাপক এসএম জিল্লুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও শক্তি জানান দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
নওগাঁ সদর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে রাত থেকে কলেজ চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় হোস্টেলের মনিটর রানা হোসেন রনি বাদী হয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত প্রায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।