নারীরা সমতা এনেছে বিজ্ঞানশিক্ষায় - Dainikshiksha

নারীরা সমতা এনেছে বিজ্ঞানশিক্ষায়

নিজস্ব প্রতিনিধি |

nariজাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেসকো) বলছে, বিজ্ঞানশিক্ষায় অংশগ্রহণে বাংলাদেশের নারীরা সমতা অর্জন করেছে। তবে পিছিয়ে আছে প্রকৌশল গবেষণায়। বিশ্বজুড়ে কৃষি ও চিকিৎসায় স্নাতকোত্তর শিক্ষা ও গবেষণায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও এ দুটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে। ‘সায়েন্স রিপোর্ট: টুওয়ার্ডস ২০৩০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ইউনেসকো এ তথ্য দিয়েছে। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি প্যারিস থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক প্রবণতা হচ্ছে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নারীর সংখ্যা ও হার বাড়ছে। কিছু ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা পুরুষকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পিএইচডি স্তরে এসে নারীর অংশগ্রহণ হঠাৎ করে কমে যায়। এই বৈষম্য আরও বাড়ে গবেষণার ক্ষেত্রে। বর্তমানে বিশ্বের ৭২ শতাংশ গবেষক পুরুষ এবং নারী মাত্র ২৮ শতাংশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহিন পুষ্টি নিয়ে গবেষণা করছেন দীর্ঘদিন। তিনি গবেষণা তদারকিও করেন। তিনি বলেন, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পর মেয়েদের বয়স বেড়ে যায়। তাঁদের বিয়ে হয়, ঘরসংসার করতে হয়। তাঁদের পক্ষে গবেষণা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘তারপরও যারা গবেষণা করে, তারা পুরুষের তুলনায় দ্বিগুণ-তিন গুণ পরিশ্রম করে তা করে।’

ইউনেসকোর ৮২০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী-পুরুষের সমতা হচ্ছে একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক ধারণা। মোট গবেষকের ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব থাকলে সমতা অর্জিত হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই সমতা অর্জন করেছে। তবে প্রকৌশল গবেষণায় এ দুটি দেশের নারীরা পিছিয়ে আছেন। বাংলাদেশের মোট গবেষকদের ১৭ শতাংশ নারী।

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে ২০১২ সালের তথ্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষায় বিজ্ঞানে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ, প্রকৌশলে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ, কৃষিতে ৩১ দশমিক ১ শতাংশ এবং চিকিৎসা ও সেবায় ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ নারী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষি এবং চিকিৎসা ও সেবার ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও কৃষিক্ষেত্রে নারী ৩০ শতাংশের কিছু বেশি। অবশ্য প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয়েছে যে এই ধারা আসলে দক্ষিণ এশিয়ার।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী রুব্হানা রকীব রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে থাকা যেকোনো যক্ষ্মার জীবাণু (ফুসফুসের যক্ষ্মা ও ফুসফুসবহির্ভূত যক্ষ্মা) শনাক্ত করার প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন। ইউনেসকোর তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে এই বিজ্ঞানী বলেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষার্থী বেশি দেখা যায়। তবে উচ্চশিক্ষা শেষ করে সবাই সংশ্লিষ্ট পেশায় যেতে পারেন কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ইউনেসকোর তথ্য সঠিক বা প্রায় সঠিক।’

প্রতিবেদনে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের অসমতা দূর করার জন্য কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভ্রমণ, সম্মেলনে অংশগ্রহণ ও আর্থিক সুযোগে সমতা বিধান, লিঙ্গবৈষম্য ও গবেষণা অর্থায়নে লিঙ্গবৈষম্য দূর করা, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও কর্মপরিবেশ আধুনিকায়ন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জেন্ডার নীতিমালা গ্রহণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাছাই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। নিয়োগ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অবচেতনভাবে থাকা পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি আলোচনায় আনতে হবে। পাশাপাশি নারীর পারিবারিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

এ ব্যাপারে নাজমা শাহিন বলেন, নারীকে গবেষণায় নিয়োজিত করতে হলে সরকারকে ‘ইতিবাচক-বৈষম্য’ (পজিটিভ ডিসক্রিমিনেশন) রেখে নীতি প্রণয়ন করতে হবে। অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে বা কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতির ক্ষেত্রে এই বৈষম্য হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজ্ঞান ও অন্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারী প্রতিনিধিত্ব কম থাকলেও শিক্ষার প্রায় সব পর্যায়ে নারী ও পুরুষের সমতা অর্জিত হয়েছে। উত্তর আমেরিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৫৭ শতাংশ নারী, দক্ষিণ আমেরিকায় ৪৯ থেকে ৬৭ শতাংশ, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ৫৭ থেকে ৮৫ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী। এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আফগানিস্তানে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইতিবাচক ধারা দেখা গেছে বাংলাদেশে। এ দেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী (২০১২ সালের হিসাব)।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041921138763428