পরীক্ষার ভার কমানো হলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা এমনিতেই কমে যাবে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। গত সোমবার তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাই হয়ে গেছে পরীক্ষানির্ভর।
এত পরীক্ষাই হওয়া উচিত নয়। আমাদের সময় তো এত পরীক্ষা হতো না। তখনকার শিক্ষার্থীরা কি শেখেনি? আর স্কুলের পরীক্ষা তো হওয়ার কথা স্কুলভিত্তিক। এক স্কুলের প্রশ্নের সঙ্গে অন্য স্কুলের মিল থাকবে কেন? এক স্কুল যা পড়িয়েছে অন্য স্কুল তা নাও পড়াতে পারে। আমাদের প্রশ্ন ফাঁস রোধের চেয়েও আগে পরীক্ষার ভার কমানো উচিত। তাহলে এমনিতেই প্রশ্ন ফাঁস কমে যাবে। ’
পাবলিক পরীক্ষায় অভিন্ন প্রশ্নপদ্ধতির বিষয়ে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে যেকোনো কিছু বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে। কিন্তু বোর্ডভিত্তিক প্রশ্ন থেকে যদি অভিন্ন প্রশ্নপত্রে চলে আসে তাহলে তো তা কেন্দ্রীভূত হয়ে গেল। এতে এক জায়গায় প্রশ্ন ফাঁস হলে গোটা পরীক্ষাই বানচাল হয়ে যাবে।
’অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীর চেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি তৈরি করছি। সৃজনশীল পদ্ধতি আরো বেশি সমস্যার সৃষ্টি করছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেউ সৃজনশীল বোঝে না। তারা নোট-গাইডের আশ্রয় নেয়। শিক্ষার্থীরা গাইড পড়ে, কোচিংয়ে যায়। শিক্ষকরাও গাইড থেকে প্রশ্ন করে। এখন যারা সৃজনশীলই বোঝে না তারা তো প্রশ্ন ফাঁসের পেছনে দৌড়াবেই। ’
প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার জন্য কারা দায়ী জানতে চাইলে এই শিক্ষাবিদ বলেন, ‘আসলে কারো উপরে দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। গোটা সিস্টেমটাই এর জন্য দায়ী। মন্ত্রণালয়ের উচিত হবে আগে অপরাধীদের চিহ্নিত করা। তারপর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের হাত থেকে বাঁচানোর দায়িত্বও শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরই নিতে হবে। ’