পরীক্ষা না থাকলে কী হয়? - দৈনিকশিক্ষা

পরীক্ষা না থাকলে কী হয়?

মুহম্মদ জাফর ইকবাল |

আমি জানি আমার এ লেখার শিরোনাম দেখে সবাই চমকে উঠবে। অনেকে ভাববে আমি মনে হয় পাগল হয়ে গেছি। যারা আমাকে চেনে তারা ভাববে এটি নিশ্চয়ই এক ধরনের কৌতুক কিংবা স্যাটায়ার। আমাদের লেখাপড়ার পুরো ব্যাপারটিই হচ্ছে পরীক্ষানির্ভর। সারা বছর ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা দেয়, যে স্কুল যত ‘ভালো’ তাদের পরীক্ষা তত বেশি। ১২ বছর লেখাপড়া করার সময় তারা একবার কিংবা দুইবার নয়, চার-চারবার পাবলিক পরীক্ষা দেয়। স্কুলের লেখাপড়ার (কিংবা পরীক্ষার) ওপর অভিভাবকদের ভরসা নেই, তাই তাঁদের ছেলে-মেয়েদের কোচিংয়ে ঢুকিয়ে দেন, সেখানেও তারা পরীক্ষার পর পরীক্ষা দেয়। নানা নামে গাইড বই বিক্রি হয়। সেখানে প্রশ্ন এবং উত্তর লেখা থাকে, ছেলে-মেয়েরা সেগুলো মুখস্থ করে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। দেশের নামিদামি পত্রিকাগুলো শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আহাজারি করে, কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন করে; কিন্তু তারা নিজেরা নিয়মিত গাইড বই ছাপিয়ে যায়, ছেলে-মেয়েরা যেন ঘরে বসে পরীক্ষা দিতে পারে। দেশের অভিভাবকদের বেশির ভাগই মনে করে, লেখাপড়ার মানে হচ্ছে পরীক্ষা দেওয়া। ভালো লেখাপড়া মানে পরীক্ষায় ভালো গ্রেড পাওয়া। কাজেই আমি যদি বলি ‘পরীক্ষা না থাকলে কী হয়’, তাহলে দেশের সব মানুষ যদি আমাকে উন্মাদ ভাবে, তাহলে তাদের দোষ দেওয়া যায় না। কিংবা তারা যদি মনে করে আমি একটা রসিকতা করছি এবং এই লেখার মধ্যে সেই রসিকতা খুঁজতে থাকে, তাহলেও তাদের মোটেও দোষ দেওয়া যায় না।

আমি কিন্তু উন্মাদ হয়ে যাইনি কিংবা রসিকতা করার জন্য এ লেখা লিখছি না, আমি যথেষ্ট সিরিয়াসলি এটি বলছি। বর্তমানে যে শিক্ষানীতিটি আছে সেটি তৈরি করার জন্য যে কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, আমি তার একজন সদস্য ছিলাম এবং আমার স্পষ্ট মনে আছে আমরা সেখানে বলেছিলাম, প্রাইমারি স্কুলের প্রথম তিন বছর কোনো পরীক্ষা থাকবে না। আমরা যে খসড়াটি জমা দিয়েছিলাম তার অনেক পরিবর্তন করে সেটি পাস করানো হয়েছিল। কারণ আমরা মাত্র দুটি পাবলিক পরীক্ষার কথা বলেছিলাম; কিন্তু এখন আমরা সবাই জানি, এ দেশের বাচ্চাদের অনেক কষ্ট দিয়ে চারটি পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। কাজেই লেখাপড়ার প্রথম তিন বছর কোনো পরীক্ষাই থাকবে না—এ সিদ্ধান্ত শিক্ষানীতিতে আদৌ আছে কি না, আমি জানি না। কিন্তু যেহেতু মনে করা হয়, লেখাপড়া মানেই হচ্ছে পরীক্ষা। কাজেই আমরা সবাই জানি, এ দেশের একেবারে দুধের বাচ্চাটিকেও পরীক্ষা দিতে হয় এবং সেই পরীক্ষায় একটু উনিশ-বিশ হলে অভিভাবকরা বাচ্চাদের জীবনকে ওলটপালট করে ফেলেন।

কিন্তু অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি, পৃথিবীর অনেক দেশে বাচ্চাদের জীবন থেকে পরীক্ষা নামের অভিশাপটি দূর করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর কোন দেশে সবচেয়ে ভালো লেখাপড়া হয় জিজ্ঞেস করা হলে সাধারণত ফিনল্যান্ডের নামটি বলা হয়। সে দেশের বাচ্চারা তাদের জীবনের প্রথম পরীক্ষাটি দেয় ১৬ বছর বয়সে। কোনো পরীক্ষা না দিয়েই তারা যেটুকু শেখার কথা সেটুকু শিখে যাচ্ছে, তাহলে আমরা কেন আমাদের দেশে লেখাপড়া এবং পরীক্ষা সমার্থক করে ফেলেছি?

এ ব্যাপারে কিছুদিন আগে আমার একটি চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা হয়েছে। একদিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। সে কোনো একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করে। যাঁরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপ্রক্রিয়া জানেন তাঁরা সবাই অনুমান করতে পারবেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। তার সঙ্গে কথা বলতে বলতে আমি প্রায় হঠাৎ করে জানতে পারলাম সে পিতৃ-মাতৃহীন একজন পথশিশু হয়ে বড় হয়েছে। তার বয়স যখন ১৩ কিংবা ১৪ তখন হঠাৎ লেখাপড়া করার শখ হয়েছে তার। নিজে নিজে বর্ণ পরিচয় করে প্রথম ভর্তি হয়েছে অষ্টম শ্রেণিতে অর্থাৎ প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তার কোনো লেখাপড়া নেই। পড়াশোনায় যথেষ্ট মনোযোগী ছিল বলে সে স্কুল শেষ করে কলেজ এবং কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সে জীবনেও কোনো কোচিং বা প্রাইভেট পড়েনি এবং পথেঘাটে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অভ্যাস হয়ে গেছে বলে এখনো বালিশ ছাড়া ঘুমায়!

নিঃসন্দেহে ছেলেটি মোটেও আর দশজন সাধারণ ছেলে-মেয়ের মতো নয়; কিন্তু তার জীবন থেকে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিখেছি। একজন ছাত্র বা ছাত্রী যদি অষ্টম শ্রেণি থেকে তার লেখাপড়া শুরু করে, সে যদি চায়, তাহলে সে স্কুল-কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করে দিতে পারবে। সেই থেকে আমি ভাবছি তা-ই যদি সত্যি হয়, তাহলে কেন আমরা প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষার পর পরীক্ষা নিয়ে একজন ছাত্র বা ছাত্রীর জীবনকে বিষময় করে তুলি? কেন তাকে আনন্দময় একটি পরিবেশে বড় হতে দিই না। কোনো চাপ না দিয়ে তাকে নিজের মতো করে পরবর্তী জীবনে লেখাপড়া করার জন্য প্রস্তুত হতে দিই না? এমন নয় যে এটি খুবই আজগুবি একটি কথা, পৃথিবীতে এই মুহূর্তে অনেক দেশে এমনটি করা হয়। পরীক্ষা নেই বলে সবাই ফাঁকি দিয়ে চূড়ান্ত একটি করে গবেট তৈরি হচ্ছে না, বরং উল্টো ব্যাপারটি ঘটছে। তাদের শৈশবটি হচ্ছে আনন্দময় এবং অন্য দেশের ছেলে-মেয়েদের থেকে তারা ভালো শিখছে। কারণ তারা শিখছে নিজের ইচ্ছায়, নিজের আনন্দে!

২.

পরীক্ষানির্ভর লেখাপড়া তো অনেক দিন থেকেই হচ্ছে। আমরা ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ভয় দেখিয়ে, চাপ দিয়ে তাদের পড়াশোনা করিয়ে যাচ্ছি। গাইড বইয়ের ব্যবসায়ী, আর প্রাইভেট এবং কোচিং ব্যবসায়ীদের ছাড়া অন্য কারো খুব বড় লাভ হয়েছে বলে তো মনে হয় না। কিছুদিন হলো আমি টের পেয়েছি কোচিং ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট সংগঠিত। কোচিং ব্যবসা বন্ধ নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হওয়ার পর হঠাৎ একদিন ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আমার কাছে অসংখ্য ই-মেইল এসে হাজির। প্রতিটি ই-মেইলের বক্তব্য একই ধরনের। কোচিং যে আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য কত প্রয়োজনীয় এবং এই কোচিং করে যে দেশের লেখাপড়া কত এগিয়ে গেছে সেটিই হচ্ছে মূল বক্তব্য। আমি খুবই অবাক হয়ে তাদের সবার ই-মেইলের উত্তর দিয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলাম, হঠাৎ করে তারা এই ব্যবসার গুণকীর্তন করতে শুরু করেছে কেন? কোনো কোচিং ব্যবসায়ী কি তাদের আমার কাছে এ রকম ‘লবিং’ করার জন্য প্ররোচিত করেছে? বলতে গেলে কেউ সেই ই-মেইলের উত্তর দেয়নি—একজন ছাড়া। তিনি লিখেছেন যে তিনি মোটেও এই ই-মেইল পাঠাননি। অন্য কেউ তাঁর ই-মেইল হ্যাক করে আমার কাছে এই মেইল পাঠিয়েছে। আমি অনুমান করছি, কোচিং ব্যবসায়ীরা আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তিতে যথেষ্ট দক্ষ, তারা শুধু এই ব্যবসা করে ছাত্র-ছাত্রীদের বারোটা বাজিয়েই সন্তুষ্ট নয়, তাদের ব্যবসা যেন বন্ধ না হয়ে যায় সে জন্য যত রকম প্রচারণা চালানো যায়, সেগুলোও খুবই দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছে।

যা হোক, আমি আবার মূল বক্তব্যে ফিরে যাই। আমরা বহুদিন থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রিক লেখাপড়া করে যাচ্ছি, তাতে আমাদের সাফল্য কতখানি? ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী তৃতীয় শ্রেণির ছেলে-মেয়েদের ৩৫ শতাংশই যেটুকু বাংলা পড়ার কথা সেটুকু বাংলা পড়তে পারে না, ৬০ শতাংশই যেটুকু গণিত জানার কথা সেটুকু গণিত জানে না। যখন তারা পঞ্চম শ্রেণিতে উঠেছে তখন আমার সমস্যা কাটিয়ে ওঠার বদলে সমস্যা আরো বেড়ে গেছে, তখন ৮০ শতাংশ ছেলে-মেয়ে যেটুকু জানার কথা সেটুকু জানে না। সংখ্যাটি অবিশ্বাস্য, মেনে নিতে কষ্ট হয়। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন বের হয়েছে, সেখানে তারা আমাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার অবস্থাটা একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী আমাদের ছেলে-মেয়েদের জীবনের প্রথম ১১ বছরের লেখাপড়ার মধ্যে সাড়ে চার বছর পরিমাণ সময় লেখাপড়া হয় না। অর্থাৎ আমরা তাদের ১১ বছরে সাড়ে ছয় বছরের সমান পড়িয়েছি।

বিষয়টি নিয়ে যে পরিমাণ হৈচৈ, আলোচনা হওয়ার কথা ছিল সেটি হয়নি। অবাক হওয়ার কিছু নেই, সমস্যার সমাধান করা কঠিন, মেনে নেওয়া অনেক সহজ। তখন কাউকেই কিছু করতে হয় না; এক-দুটি দীর্ঘশ্বাস ফেললেই নিজের কাছে নিজে দায়মুক্ত থাকা যায়। নানা প্রতিষ্ঠানের নানা ধরনের জরিপ নানা পরিসংখ্যানের কতটুকু খাঁটি কিংবা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য, আমি সে আলোচনায় যাচ্ছি না। আমি শুধু সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, এ দেশের প্রায় পাঁচ কোটি ছেলে-মেয়ে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় পড়াশোনা করে। তাদের সবাইকে যদি একটুখানিও ঠিক করে পড়াশোনা করানো যায়, সেটি বিশাল একটি ব্যাপার। ঠিক সে রকম আমরা যদি তাদের লেখাপড়া করাতে একটুখানিও ব্যর্থ হই, সেটি ঠিক সে রকম বিশাল একটি বিপর্যয়। কতটুকু লেখাপড়া হয়েছে তার সঠিক পরিমাপ করার জন্য সবাই মিলে গবেষণা করতে থাকুক; কিন্তু কোনো রকম গবেষণা না করেই আমরা অন্তত একটি বিষয় বলে দিতে পারি। সেটি হচ্ছে আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদের জীবন হচ্ছে আনন্দহীন। পরীক্ষার জন্য ছুটতে ছুটতে যে জীবন গাইড বই আর কোচিং সেন্টার দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়েছে, সেই জীবনে একটি শিশুর জীবনকে উপভোগ করার সময় কোথায়?

মস্তিষ্কের মধ্যে তথ্য ঠেসে দেওয়াটা শিক্ষা নয়, বইপত্রে তথ্য আছে—যখন দরকার সেই তথ্য দেখে নেওয়া যাবে—মুখস্থ করে সেটি মাথায় ঢোকাতে হবে কেন? শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মস্তিষ্ককে শাণিত করে রাখা, যেন সেটি সমস্যার সমাধান করতে পারে, অনেক তথ্য দিয়ে দিলে সেটি বিশ্লেষণ করতে পারে, নতুন কিছু করতে পারে। শিক্ষার উদ্দেশ্য মোটেও তথ্য মুখস্থ করা নয়।

৩.

কেউ যেন মনে না করেন, আমি বলছি আগামীকাল থেকে বাংলাদেশের সব স্কুল-কলেজ থেকে হুট করে সব পরীক্ষা তুলে দেওয়া হোক! শুধু তা-ই নয়, ফিনল্যান্ডে যে মডেল কাজ করেছে আমাদের দেশেও সেই মডেল কাজ করবে—তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফিনল্যান্ডে সবচেয়ে লোভনীয় চাকরি হচ্ছে স্কুলে শিক্ষকতা, আমাদের দেশে ঠিক তার উল্টো! আমাদের দেশে শিক্ষকের চাকরিতে সম্মান নেই, অর্থবিত্ত বা সুযোগ-সুবিধা নেই, বড় হওয়ার সুযোগও নেই। ফিনল্যান্ডের শিক্ষকরা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে আলাদা করে বড় করে তোলেন। আমাদের দেশের স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শিক্ষক নেই, বাচ্চারা নিজেরা  হৈচৈ-চেঁচামেচি করে সময় কাটাচ্ছে। শিক্ষার জন্য আরো অনেক টাকা খরচ না করলে আমরা এর চেয়ে বেশি কী আশা করতে পারি?

তার পরও আমাদের লেখাপড়ার পুরো বিষয়টি আলাদা করে ভেবে দেখার সময় হয়েছে। যখনই আমরা গতানুগতিক নিয়মের বাইরে গিয়ে ছেলে-মেয়েদের কিছু একটা শেখানোর চেষ্টা করেছি, তারা সেই সুযোগ গ্রহণ করেছে। এ দেশের অলিম্পিয়াডগুলো হচ্ছে তার উদাহরণ। সারা পৃথিবীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে অলিম্পিয়াডের প্রতিযোগীরা স্বর্ণ, রৌপ্য কিংবা ব্রোঞ্জপদক নিয়ে আসছে। আমি খুবই আনন্দিত হয়েছি, যখন দেখেছি আমাদের প্রাইমারি স্কুলগুলোয় গণিত অলিম্পিয়াড পদ্ধতি ব্যবহার করে ছেলে-মেয়েদের গণিত শেখানো যায় কি না, সেটি নিয়ে একটি পাইলট প্রজেক্ট হয়েছে। সত্যি সত্যি সেটি যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে অন্ততপক্ষে গণিত শেখার সময় ছেলে-মেয়েরা বাঁধাধরা নিয়মের বাইরে গিয়ে একটুখানি হলেও আনন্দমুখর পরিবেশে শিখতে পারবে।

লেখাপড়ার ব্যাপারে সারা পৃথিবীতেই একটি পরিবর্তন আসছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কথাটি আমরা খুব ঘন ঘন শুনতে পাচ্ছি। অটোমেশন ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কারণে পৃথিবীতে খুব তাড়াতাড়ি মানুষের গতানুগতিক প্রয়োজন কমে আসবে। সবাই আশঙ্কা করছে, দেখতে দেখতে কোনো এক দিন সাধারণ গতানুগতিক মানুষেরা আবিষ্কার করবে এই পৃথিবীতে তার প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর সবাই সেই সময়টির মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমাদেরও নিতে হবে। সে সময়টিতে যান্ত্রিক মুখস্থবিদ্যায় পারদর্শী মানুষের কোনো প্রয়োজন থাকবে না। তাই আমাদের ছেলে-মেয়েদের এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যেন তারা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে, সমস্যার সমাধান করতে পারে। প্রয়োজনে নতুন নতুন ধারণা দিতে পারে।

এর জন্য যদি পরীক্ষা তুলে দিতে হয়, সেটিও নিশ্চয়ই তুলে দেওয়া যাবে। তবে আগে যেভাবে হুট করে একজন আমলা কিছু একটা বড় পরিবর্তন করে ফেলতেন, সেভাবে নয়—চিন্তাভাবনা করে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, আলাপ-আলোচনা করে, গবেষণা করে।

এর কারণ আমাদের সবার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হতে হবে এ দেশের শিশু-কিশোরদের একটি আনন্দময় শৈশব উপহার দেওয়ার। সেটি যদি করতে না পারি, তাহলে তারা আমাদের কোনো দিন ক্ষমা করবে না।

লেখক : কথাসাহিত্যিক, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033359527587891