পাঠ্যপুস্তকে অনিয়ম-দুর্নীতি - দৈনিকশিক্ষা

পাঠ্যপুস্তকে অনিয়ম-দুর্নীতি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বিনা মূল্যে দেয়া হয় বলেই বোধহয় প্রতি বছর পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, সরবরাহ ও বিতরণ নিয়ে নানা দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ওঠে এনসিটিবি ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে নানা উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও অদ্যাবধি কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। আর কবে হবে, কে জানে? সরকার ২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩৫ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৪ কপি বই ছাপছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৩৭৫ কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৪ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ১৭৯ কপি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে বিনা মূল্যে। এর বাইরেও কিছু বই ছাপা হয়ে থাকে প্রাক-প্রাথমিক স্তরের জন্য। এতে সরকারের মোট ব্যয় হয় প্রায় ১১শ’ কোটি টাকা। নিঃসন্দেহে বিশাল অঙ্কের সুবিশাল একটি কর্মকাণ্ড। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, প্রায় চারশ প্রতিষ্ঠান এসব বই মুদ্রণ ও সরবরাহের কাজে জড়িত। এও সত্য যে, এটি বর্তমান সরকারের অন্যতম একটি ধারাবাহিক সাফল্য, যা বাস্তবায়িত হচ্ছে ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে। নতুন বছরের শুরুতেই দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয় বিনা মূল্যের এত বিপুল সংখ্যক পাঠ্যবই, যা ইতোমধ্যে পরিণত হয়েছে জাতীয় উৎসবের পর্যায়ে। তবে যা দুঃখজনক তা হলো, প্রায় প্রতি বছরই পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, সরবরাহ ও বিতরণ নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে, যার অনেকাংশই অসত্য নয়। উদাহরণস্বরূপ কাগজের কথা বলা যায়। এত বিপুল সংখ্যক বইয়ের কাগজ কিনে দেয় এনসিটিবি, ৩৪০টি লটের বই মুদ্রণের কাগজ। তবে এক শ্রেণির অসাধু প্রিন্টার্স তথা মুদ্রক সরকারের ভালো মানের কাগজ খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে নিম্নমানের কাগজ কিনে বই ছাপে। ফলে স্বভাবতই ছবিসহ মুদ্রণ সৌকর্যের বিনাশ ঘটে। এর পাশাপাশি নিম্নমানের ছাপা, বানান বিভ্রাট, অস্পষ্ট ছবি, দুর্বল বাঁধাই এমনকি ফর্মার হেরফের তো আছেই। এনসিটিবির পরিদর্শক টিম সরেজমিন পরিদর্শন করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে লিখিত ও মৌখিকভাবে সতর্ক করে দিলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল কি হবে, তা অনিশ্চিত। প্রশ্ন হলো প্রতি বছরই তা হবে কেন?

দেশে যে প্রতিবছর পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, মুদ্রণ ও সরবরাহ নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে থাকে তার ভয়াবহ ও আশঙ্কাজনক বিবরণ মেলে টিআইবির প্রতিবেদনে। উল্লেখ্য, এই কাজটির দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি। প্রতিষ্ঠানটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি-অনিয়মের বিষয়টি সুবিদিত। ইতোপূর্বে মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কট্টর মতাদর্শ ও পরামর্শে পাঠ্যপুস্তকের মর্জিমাফিক পরিবর্তনসহ ভুল মুদ্রণের অভিযোগ উঠেছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে। ব্যাপক আর্থিক অনিয়মসহ দুর্নীতির অভিযোগ তো আছেই। সত্যি বলতে কি, এনসিটিবির এই বিষয়টি এক রকম ওপেনসিক্রেট, যা নিয়ে প্রতি বছরই বিস্তর লেখালেখি হলেও প্রায় কোনো প্রতিকারই মেলে না। শিক্ষামন্ত্রী এ নিয়ে নানা কথা বললেও প্রতিষ্ঠানটির সর্বত্র স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। এও সত্য যে, দেশের প্রবীণ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। তাদের সবাই দুর্নীতি-অনিয়মকে প্রশ্রয় দেন, তা চিন্তা করাও বাতুলতা। অতঃপর এনসিটিবির ভাবমূর্তি রক্ষার্থে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট, সতর্ক ও উদ্যোগী হতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। দায়িত্বশীল সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত অনিয়ম মেনে নেয়া যায় না কিছুতেই।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063598155975342