পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু ঘটলে, বাংলাদেশও বাঁচবে না - Dainikshiksha

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু ঘটলে, বাংলাদেশও বাঁচবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক |

৮ম পে-স্কেলে প্রশাসন, পুলিশ, সামরিক, বিচার বিভাগ-সবারই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে ৭ম-এর তুলনায় উন্নয়ন ঘটেছে। কিন্তু শিক্ষকদের ৭ম-এর তুলনায় ৮ম পে-স্কেলে অবনমন ঘটেছে।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ খসড়া পে-স্কেলের পরিপ্রেক্ষিতে মৃদু, সতর্ক আন্দোলন করেন। সেটার বরাতেই শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ সকলে স্পষ্টভাবে জানতেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দের দাবিগুলো। মিডিয়ার বরাতে জাতির কাছেও সব স্পষ্ট ছিল। মন্ত্রীদের দেয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সবাইকে আশার বাণীও শুনিয়েছিলেন।

সেই আশাবাদের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে পূর্বেকার নেতৃবৃন্দ পুনরায় নির্বাচিত হন। কিন্তু প্রভাষকদের ৯ম-এর পরিবর্তে ৮ম গ্রেডে বেতন শুরু হবে, এটুকু ছাড়া ওপরের দিকে, সিলেকশন গ্রেড অবলুপ্তি এবং অধ্যাপকদের গ্রেড ৩ থেকে গ্রেড ২ ও গ্রেড ১-এ যাবার পথ একরকম বন্ধ করে দেবার মাধ্যমে পুরো শিক্ষক সমাজের সঙ্গে প্রতারণা করেছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষকদের মর্যাদার উন্নয়ন না ঘটুক, অন্তত পূর্বেকার অবস্থান বহাল না রেখে, অবনমন ঘটানোর বিষয়টি মহা বিস্ময়ের। তবে এর একটা ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব। সরকার শিক্ষক সমাজকে আর গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে না। বা বলা যায় সরকারের কাছে শিক্ষকসমাজ তাৎপর্যহীন হয়ে পড়েছে।

এর কারণ হলো:

১। বর্তমানে সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় অগণতান্ত্রিক উপাদানের উপস্থিতি প্রবল। এইরকম পরিস্থিতিতে সামরিক ও বেসমারিক আমলাতন্ত্র, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট এজেন্সি প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। আর সামাজিক ও গণতান্ত্রিক শক্তির গুরুত্ব কমতে থাকে।

২। চলমান শিক্ষক রাজনীতির বরাতে শিক্ষক সমাজ নিজেদের সস্তা, এভেইলেবল করে তুলেছে। পূর্বে রাজনীতিবিদরা শিক্ষক সমাজের কাছে আসতেন পরামর্শের জন্য। বর্তমানে শিক্ষকরাই রাজনীতিবিদদের দুয়ারে টোকা দেন সিভি হাতে, সরকারি পদপ্রাপ্তির আশায়।

৩। বেতন বৈষম্য নিয়ে আলোচনা করেছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেই তারা নিয়োগ, প্রমোশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বণ্টনে বৈষম্য করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেধা/অভিজ্ঞতা নয়, দলীয় আনুগত্যের ভিত্তিতে এসব নিয়োগ/বণ্টন/বরাদ্দ করা হয়। এসব কারণে তাদের পক্ষে জোরগলায় বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলা কঠিন হয়ে ওঠে। আর এভাবে তারা নিজেদের গুরুত্বহীন/তাৎপর্যহীন করে তুলেছেন।

আভাসে মনে হচ্ছে, গেজেটের পূর্বে যে আন্দোলন করা দরকার ছিল, গেজেটের পরে নিজেদের ব্যর্থতার পরিপ্রেক্ষিতে, নেতৃবৃন্দ কিছুটা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে যাচ্ছেন। দেরীতে হলেও তারা যদি শক্ত অবস্থান নেন, তাতে সমর্থন দিতে চাই।

তাদের পক্ষ থেকে এই আন্দোলনে দেশের সকল পেশা-শ্রেণি-বয়সের মানুষেরও সমর্থন চাচ্ছি। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু ঘটলে, বাংলাদেশও বাঁচবে না।

ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত - dainik shiksha ফল জালিয়াতি: পদে রেখেই সচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল - dainik shiksha শিক্ষক-কর্মচারী বদলি নীতিমালার কর্মশালা কাল দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha দুবাইয়ে বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha ৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল - dainik shiksha ফিলিস্তিনকে সমর্থনের ‘অভিযোগে’ সেরা ছাত্রীর বক্তৃতা বাতিল মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041708946228027