বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজ - দৈনিকশিক্ষা

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস আজ রোববার (১৭ মার্চ)। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।  জেলা, উপজেলা সদরে  আনন্দ শোভাযাত্রা, শিশু সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলোচনা সভা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। তথ্য মন্ত্রণালয় এ উপলক্ষে পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, জেলা, উপজেলা সদরে সপ্তাহব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, জনবহুল স্থানে পোস্টার প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ  বেতার ও  বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি  টেলিভিশন চ্যানেল, কমিউনিটি রেডিও এবং এফএম রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিশু একাডেমি এবং গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের জেলা তথ্য অফিসসমূহ বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শিশুর স্বাস্থ্য সচেতনতা, পুষ্টি ও খাদ্য সম্পর্কে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

রোববার সকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় আলোচনা সভা, শিশু সমাবেশ, বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক পুস্তক প্রদর্শনী, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের আঁকা চিত্র প্রদর্শনী, ‘বঙ্গবন্ধুকে লেখা চিঠি’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের লেখা নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ, ‘আমার কথা শোন’ শীর্ষক ভিডিও প্রদর্শনী এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির বাণী

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস  উপলক্ষে দেয়া বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শিশু-কিশোরকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদী কিন্তু অধিকার আদায়ে আপসহীন। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন। বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপস করেননি।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক। দেশ ও জনগণের কল্যাণ ও অধিকার আদায়ে জীবনভর সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। তিনি জানতেন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে হলে নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শৈশব থেকেই তাদের মধ্যে চারিত্রিক গুণাবলির উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। আমি আশা করি, এ দিবসটি উদযাপনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে জাতিগঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

প্রধানমন্ত্রীর বাণী

‘‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির প্রতি  গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি বলেন, এ দিনটি আমাদের জাতীয় শিশু দিবস। সকল শিশুসহ দেশবাসীর প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য : বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর জীবন করো রঙিন।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের জীবনকে রঙিন করে গড়ে তুলতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের মূল লক্ষ্যই ছিল বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে তাঁদের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়ন।  ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ‘৬৬-এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন এবং ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে আমরা অর্জন করি স্বাধীনতা সার্বভৌম বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অপরিসীম মমতা। তিনি শিশুদের কল্যাণে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বিশেষ বিধান সংবিধানে যুক্ত করেছিলেন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে শিশু আইন প্রণয়ন এবং প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। বর্তমান সরকার শিশুদের কল্যাণে বিভিন্নমুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। শিশু অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ এবং ‘শিশু অধিকার সপ্তাহ’ পালন করা হচ্ছে। জাতীয় শিশু নীতি-২০১১, শিশু আইন-২০১৩, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় শিশু দিবস, বাল্যবিবাহ নিরোধ দিবস পালন, পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রিয় মাতৃভূমিকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। শিশুদের জন্য নিরাপত্তা, খাদ্য ও পুষ্টি, আশ্রয় ও সুরক্ষা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক চাহিদা সম্পর্কিত নানাবিধ কর্মসূচিসহ শিশুশ্রম বন্ধ করার লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় টেকসই উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে। প্রায় শতভাগ শিশু এখন বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। আমরা শিশুদের জন্য জাতির পিতার জীবন ও কর্মভিত্তিক বই প্রকাশ এবং পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংযোজন করেছি। শিশুদের মনে দেশপ্রেম জাগ্রত করা, তাদের ব্যক্তিত্ব গঠন, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং আত্মবিশ্বাসী করে তোলার লক্ষ্যে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং খেলাধুলার বিভিন্ন শাখায় শিশুদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।

সকল শিশুর সমঅধিকার নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে পিতা-মাতা, পরিবার ও সমাজের ভূমিকা অপরিসীম। শিশুর প্রতি সহিংস আচরণ এবং সকল ধরনের নির্যাতন বন্ধ করার  জন্যে আজকের সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060009956359863