বরিশালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক সংকট প্রকট - Dainikshiksha

বরিশালে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষক সংকট প্রকট

বরিশাল প্রতিনিধি |

সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই ৩২ জন, সহকারী শিক্ষক নেই ১৯৭, ২০ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০টিতে নেই প্রধান শিক্ষক

বিভাগের ২০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০টিতে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারি প্রধান শিক্ষকের ৩২টি পদের সবগুলো শূন্য। সহকারী শিক্ষকের ১৯৭টি পদ শূন্য। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নতুন বছরের পড়াশুনা নিয়ে অভিভাবকরা চিন্তিত। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি নগরীতে নতুন দু’টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট।

 

বরিশাল অঞ্চলে ২০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অর্ধেক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ৩২টি পদ থাকলেও সবগুলো শূন্য। সহকারী শিক্ষকদের ৬৯৩ পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৪৯৬ জন, ১৯৭টি পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকা বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে পটুয়াখালী সরকারি জুবলী উচ্চবিদ্যালয়, ঝালকাঠী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, পিরোজপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সিরাজুল হক সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ভান্ডারিয়া উপজেলার বন্দর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, দৌলতখান উপজেলার সরকা৭র উচ্চবিদ্যালয় ও দৌলতখান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। ২০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে সাতটি বিদ্যালয়ে দুটি করে সহকারী প্রধানশিক্ষকের পদ রয়েছে, বাকী আটটিতে একটি করে পদ। কিন্তু পদগুলোতে অদ্যাবধি নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

 

বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ১৯৯১ সালে আমি এখানে যোগদান করেছি। ২৫ বছর পার হলেও পদোন্নতি পাইনি। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী চাকরির বয়স ১২ বছর হলে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হওয়ার কথা। আর সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে তিন বছর চাকরির পর প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট চরমে পৌঁছেছে, এর প্রভাব পড়ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার উপর।

 

বরিশাল নগরীতে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থা বলতে গেলে এখনো জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এ দু’টি বিদ্যালয়ে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায় না। এমনকি মন্ত্রী এমপিদের তদ্বিরেও ভর্তির সুযোগ মেলে না । স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর এ সংকট মোকাবিলায় ২০১৫ সালে নতুন দু’টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়।  নগরীর কাউনিয়া ও রূপাতলী এলাকার নতুন এ দুটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ২০১৬ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি ও পাঠদান শুরু হয়। দু’টি বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় জিলা স্কুলের ক্যাম্পাসে গত এক বছর ধরে চলছে কার্যক্রম। স্কুল ভবন নেই, নেই কোনো শিক্ষক।  বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকদের এনে সংযুক্ত করে চলছে নতুন এ দু’টি বিদ্যালয়ের পাঠদান।

 

রূপাতলী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পাপিয়া জেসমিন সংযুক্ত হয়েছেন বরিশাল জিলা স্কুল থেকে। তিনি বলেন, তার বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ২৫৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বরিশাল, বরগুনাসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার সরকারি বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক সংযুক্ত করে এখানে পাঠদান চলছে।

 

নতুন সরকারি দু’টি বিদ্যালয়সহ জেলা-উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট থাকলেও  বরিশালের জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের কোনো পদ খালি নেই। প্রতিদিনই জেলা -উপজেলা থেকে এ দু’টি স্কুলে বদলি হয়ে আসার জন্য শিক্ষকরা তদ্বির করেন। জেলা -উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ১২ জন শিক্ষকের পদে কর্মরত আছেন ৪ জন।

 

পিরোজপুরের কাউখালী এসবি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ১৫ জনের পদে আছেন মাত্র ৭ জন, কাউখালী কেজি ইউনিয়ন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে ১৬ জনের পদে আছেন ৭ জন।  বরগুনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাসিনা বেগম জানান, তার বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ৫২টি পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ২৬ জন। ইংরেজি বিষয়ে প্রভাতী ও দিবা শাখায় ৮ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র দু’ জন। প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অর্ধেকও না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা মারাত্মকভাবে  ব্যাহত হচ্ছে। এসব স্কুলের পরীক্ষার ফলাফলেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে নিয়োগবিধি সচিব কমিটিতে পাস হয়েছে। প্রাথমিক ও মাদ্রাসার মতো তাদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর থাকলে শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতির বিষয়গুলো সহজে সমাধান করা যেত। শিক্ষা নীতির ঘোষণা অনুযায়ী অধিদপ্তরের বিষয়টি কার্যকর করা হলে এ দশা দূর হবে।

প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036580562591553