বিজ্ঞান শিক্ষায় এখনো ভীতি - দৈনিকশিক্ষা

বিজ্ঞান শিক্ষায় এখনো ভীতি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ১৭ লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪০ শিক্ষার্থীই মানবিক শাখার, যা মোট শিক্ষার্থীর ৪৫ শতাংশের বেশি। আর বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী ছিল ৩১ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থী ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এসএসসি পরীক্ষার শিক্ষার্থীর সংখ্যার এই চিত্রেই বোঝা যায় এখনো বিজ্ঞানে তারা কতটা অনাগ্রহী। প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীই এখন পড়ছে মানবিক শাখায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই কারণে বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী কমছে। বিশেষ করে গ্রামের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষকের সংকট রয়েছে। আর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ধারণা জন্মেছে যে, বিজ্ঞানে পড়তে হলে প্রাইভেট কোচিং করাতে হবে। এ কারণে বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে। তাই বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের মধ্যেও ভীতি রয়েছে। বাণিজ্যে পড়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে প্রায় একই ধরনের অনাগ্রহ।রোববার (৯ ‍জুন) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক। 

অন্যদিকে বেশিরভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষ মেধাবী শিক্ষার্থীদেরই শুধু বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ দেয়। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী চাইলেও বিজ্ঞানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না। স্কুলে পাসের হার বা জিপিএ-৫ এর সংখ্যা ইত্যাদি যাতে ঠিক থাকে সে জন্য তারা নিজেদের খেয়ালখুশি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের উপর বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগ চাপিয়ে দেয়। এতে কোনো কোনো স্কুলে জিপিএ-৫ পেয়েও অনেকে বিজ্ঞান পড়তে পারে না। গ্রামের অনেক স্কুলে জিপিএ-৩ পেয়েও অনেকে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ পায়। অভিভাবকরা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞানে পড়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, অথচ স্কুল কর্তৃপক্ষের অনাগ্রহের কারণেই আগ্রহী শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানে পড়তে পারছে না।

১৯৯৮ সালে ব্যবসায় শিক্ষা চালু হলেও ৭ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী এ শাখায় পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। ধীরে ধীরে এই শাখায় শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও এখন কমতে শুরু করেছে। শিক্ষা পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে মাধ্যমিকে মোট এসএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞানের পরীক্ষার্থী ছিল ৪২ দশমিক ৮১ শতাংশ। বেশকিছু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ২৯ দশমিক ০৩ শতাংশে নেমে আসে। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা চলে গেছে মানবিকে। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী এখন বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ৩১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান কম পড়ার প্রভাব পড়েছে উচ্চ শিক্ষার স্তরেও। ২০১১ সালে বাণিজ্যে ৩৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী পড়ত। কিন্তু এখন এ সংখ্যা ২৩ শতাংশেরও কম। একই বছর মানবিক শাখায় শিক্ষার্থী ছিল ৪২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে প্রায় বাণিজ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৪৬ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সিলেবাসের মাত্রাতিরিক্ত চাপ, বিজ্ঞানশিক্ষার মাত্রারিক্ত ব্যয়ভার, স্কুল-কলেজে চাহিদা অনুযায়ী গবেষণাগার না থাকা, দক্ষ শিক্ষকের অভাব, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব ও তা ব্যবহারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সমান অনীহা, কোচিংনির্ভরতা ইত্যাদি কারণে বিজ্ঞানে শিক্ষার্থী বাড়ছে না। আর গণিত ভীতিই ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থী কমাচ্ছে। দেশের অনেক স্কুলে মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ নেই। আবার কেউ কেউ বলছেন, জেলা ও মহানগরে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। তবে মফঃস্বলে বেশি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী। গ্রামে বিজ্ঞান শিক্ষার ভালো সুযোগ না থাকায় ভবিষ্যতে পেশাগত সুবিধার কথা ভেবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষায় আগ্রহী হয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানেও বলেছেন, বিজ্ঞান শিক্ষায় দেশ এগিয়ে গেলেও এখনো পর্যাপ্ত বিজ্ঞান গবেষণাগার ও সরঞ্জামাদিরও অপ্রতুলতা রয়েছে।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0076999664306641