ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে রাতের অন্ধকারে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তৈরি করা অস্থায়ী শহীদ মিনার ভেঙে দিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার গড়াবেড় আব্দুল হেকিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নূরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গড়াবেড় আব্দুল হেকিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় ২১ ফেব্রুয়ারী মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রভাত ফেরী করে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কলা গাছ দিয়ে যত্ন করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে একটি অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে। কিন্তু গভীর রাতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা শহীদ মিনারটি ভেঙে ও দা দিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে। আজ বুধবার ভোরে শিক্ষার্থীরা হাতে হাতে ফুল নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে দেখে তাদের আবেগ-ভালবাসা দিয়ে যত্নে গড়া শহীদ মিনারটি কে বা কারা কেটে ফেলেছে। এতে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি করতে থাকে। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ সহকারি শিক্ষকরা এ ঘটনাটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নূরুল ইসলামকে অবহিত করলে তিনি এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে গড়াবেড় আব্দুল হেকিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিহা খানম বলেন, ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের জন্ম ভিটা পাঁচুয়ায়(জব্বার নগর) অবস্থিত উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি আমার বিদ্যালয় থেকে অনেক দূরে। সব শিক্ষার্থীকে নিয়ে এত দূরে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের সম্মান জানানোর আব্দার জানালে তাদের উৎসাহিত করেছি। কিন্তু দুর্বৃত্তরা রাতের আধারে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আবেগ আর ভালবাসাকে নষ্ট করে দিল।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) নূরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষককে গফরগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়েছি। ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ শামীম রহমান বলেন, খবর পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে(ভারপ্রাপ্ত) ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি এবং নতুন করে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শিক্ষার্থীদের ফুল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষককে সাধারণ ডায়েরি করার ও গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।