বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হুমকি - দৈনিকশিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হুমকি

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

একের পর এক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার নিয়োজিত উপাচার্যের নেতৃত্বে নানা অপকর্মের খবর প্রকাশিত হচ্ছে; শত বাধা-হুমকি সত্ত্বেও শিক্ষার্থী ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষকরাও প্রতিবাদ করছেন। আবরার খুনের ভয়ংকর চিত্র প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও বহু নির্যাতন সেলের খবর প্রকাশিত হচ্ছে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ উদ্ধারে এসব লাঠিয়াল বাহিনী ও তার পৃষ্ঠপোষক প্রশাসন নিয়ে সরকারের যথাযথ উদ্যোগের বদলে প্রথমে নিষ্ফ্ক্রিয়তা, পরে প্রতিবাদী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারের আক্রমণাত্মক বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বস্তুত সর্বজন বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার উৎস সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিমালার মধ্যেই।

দেশে চারটি পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম; পরিচালিত হওয়ার কথা ১৯৭৩-এর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ দ্বারা। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও এখন কোনোটিতেই নির্বাচিত উপাচার্য নেই। বাকি ৪০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হওয়ার আইন দ্বারাই চলছে।

সেখানে সব উপাচার্য সরকারই নিয়োগ দিয়ে থাকে। দুই ধারার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন তাই একাকার। এই তথ্য এখন সবাই জানেন যে, উপাচার্য হতে গেলে সরকারের তো বটেই, এমনকি সরকারি লাঠিয়াল ছাত্র সংগঠনের সন্তুষ্টি অর্জন করাও গুরুত্বপূর্ণ।

প্রকৃতপক্ষে নানা প্রতিষ্ঠানের যাচাই-বাছাইয়ের পর সরকার থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়। গোয়েন্দা সংস্থা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং আচার্য বা রাষ্ট্রপতির কার্যালয়; এত প্রতিষ্ঠানের ছাঁকনি দিয়ে তাদের দৃষ্টিতে যোগ্যতম ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তব অবস্থা থেকে দেখা যাচ্ছে, উপাচার্য হওয়ার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হচ্ছে সরকারের প্রতি আনুগত্যের অসীম ক্ষমতা।

শিক্ষা ও গবেষণার বদলে ক্ষমতা ও অর্থের লোভ, আত্মসম্মানবোধের অভাব, মাস্তানতোষণ এবং মেরুদণ্ডহীনতা- এগুলো বিশেষ যোগ্যতা বলে মনে হয়। নইলে সরকারি সমর্থকদের মধ্যে আরও যোগ্য লোক থাকলেও বেছে বেছে এ ধরনের লোক কেন নিয়োগ দেওয়া হয়? বরিশাল, গোপালগঞ্জের ভিসি তাড়া খেয়ে পালিয়েছেন।

রংপুরের ভিসি তো বেশিরভাগ সময় ঢাকাতেই থাকেন। রাজশাহী, পাবনাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ঘুরছে। বুয়েটের ভিসি শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার পদত্যাগের দাবি সত্ত্বেও গদি আঁকড়ে বসে আছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার নিযুক্ত ভিসি ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সরকারি ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতির অনেক বড় অভিযোগের পরও সরকারের কোনো উদ্যোগ ছিল না।

এখন কোনো তদন্ত ছাড়াই সরকার থেকে বলা হচ্ছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা। উল্টো সরকার থেকে প্রতিবাদী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ এতদিন ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ঘিরে যে অভিযোগ ঘুরছে, তা উত্থাপন করেছে সরকারি ছাত্র সংগঠনের নেতারা।

তারপরও সরকারের সংশ্নিষ্ট প্রতিষ্ঠান কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি। বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত কমিটি যদি ভিসিকে নির্দোষ প্রমাণ করত, তাহলে অভিযোগ উত্থাপনকারী হিসেবে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হতো।

বস্তুত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান আন্দোলন শুরুতে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পনা, অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে; স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে। এর মধ্যেই টাকা ভাগবাটোয়ারার খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু এ বিষয়ে সরকার বা প্রশাসন কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ না নেওয়ায় আন্দোলন ভিসিবিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়। তার মানে আন্দোলন ভিসিবিরোধী হওয়ার পেছনে দায় প্রথমত প্রশাসনের, দ্বিতীয়ত সরকারের।

সরকারের নিষ্ফ্ক্রিয়তার কারণেই আন্দোলন এক পর্যায়ে অবরোধ কর্মসূচিতে রূপ নেয়। সরকার তারপরও সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আর উপাচার্য ছাত্রলীগকে দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করিয়েছেন। আহত হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক মাটিতে লুটিয়েছেন, নারী শিক্ষার্থীর তলপেটে লাথি মারা হয়েছে।

ভিসি এর পর পুলিশসহ এই আক্রমণকারীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের পেশির জোরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন; জোরজবরদস্তি করে হল খালি করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে, জোবায়েরকে ক্যাম্পাসে, আবরারকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতনে খুন করে দেশব্যাপী যাদের পরিচিতি, টাকার ভাগ কিংবা নকলের দাবিতে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা যাদের নিয়মিত কাজ, টেন্ডার, জমি দখল, গদি দখল, নির্যাতন ইত্যাদিতে ভাড়া খেটে যাদের পদোন্নতি; হেলমেট বাহিনী, হাতুড়ি বাহিনী হয়ে যারা স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষতবিক্ষত করে, তাদের ছাড়া যখন কোনো উপাচার্যের উদ্ধারের পথ থাকে না, তখন তার পদে থাকার নৈতিক ভিত্তি থাকে কীভাবে? এর পরও সরকার সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে অভিযোগের আঙুল তুলেছে সেই আক্রান্ত, আহত, রক্তাক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়কে অপরিকল্পনা, দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা, সন্ত্রাস আর অশিক্ষা থেকে মুক্ত করতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

আবরারের খুনের জন্য যারা দায়ী তাদের স্থায়ী বহিস্কার দাবি করেছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। দাবি মেনে নিয়েও তা পুরো কার্যকর করছে না প্রশাসন। এত ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করে একজন শিক্ষার্থীকে খুন করল যারা, তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন উপাচার্যসহ বুয়েট প্রশাসন। সেই প্রশাসনের পরিবর্তে সরকারের হুমকি আসছে নিপীড়িত, ভয়ার্ত শিক্ষার্থীদের প্রতি; তাদের বহিস্কারের কথা বলা হচ্ছে।

সর্বজন বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মানুষের জন্য নিরাপদ; অর্থ নয় মেধার ভিত্তিতে সহজে প্রবেশযোগ্য, সর্বজনের স্বার্থে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মুক্ত পরিবেশ তৈরির প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন সরকারের ভূমিকা দেখে মনে হয়, এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে তার কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে দেওয়ার বদলে এখানে সরকারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই তাদের লক্ষ্য।

চিন্তা ও বুদ্ধিবৃত্তির জগৎ, তারুণ্য, স্বাধীন মত- এগুলোর প্রতি ভয় ছাড়া এর আর কোনো কারণ নেই। তাই হল দখলে রাখা, গণরুম-গেস্টরুম সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি ইত্যাদি ঘটে সরকারি দলের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণে রাখার সামগ্রিক নীতিমালা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে। এই কাজ স্বচ্ছন্দে চালানোর জন্য দরকার মাস্তান তোষণকারী, মেরুদণ্ডহীন, লোভী কিছু 'শিক্ষক'। সরকার তাদের দিয়েই তাই প্রশাসন সাজাতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যার উৎস এখানেই।

গত কয়েক বছরে এ পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। সারাদেশে একদলীয় কর্তৃত্ব, চরম অসহিষুষ্ণতা ও নিপীড়নের কালে বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠেছে মাস্তান ও মেরুদণ্ডহীনদের অবাধ রাজ্য। গণরুম, গেস্টরুমের মতো টর্চার সেল গঠন করে নিজেদের 'রিজার্ভ আর্মি' বানানো, ভয়ের রাজত্ব তৈরি করে নিজেদের ও সহযোগী কর্তাদের যথেচ্ছাচার অবাধ করার চেষ্টাই প্রধান। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বাণিজ্যিকীকরণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলের মধ্যে প্রাইভেটাইজেশনের দাপট।

দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। বিভিন্ন পুরোনো ও নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগের সংখ্যাও বেড়েছে। সে তুলনায় শিক্ষক, ক্লাসরুম, প্রয়োজনীয় উপকরণের অবিশ্বাস্য ঘাটতির কারণে বহু বিভাগই খুঁড়িয়ে চলছে কিংবা চলছে না। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ কথা সর্বজনবিদিত- একজন ভুল শিক্ষক নিয়োগ হলে তার পরিণতিতে কমবেশি ৪০ বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্মের মধ্যে ভুল-কু-অশিক্ষা প্রবেশ করে। সেই শিক্ষার্থীরাই আবার শিক্ষক বা পেশাজীবী হয়। তারা যে ভুল শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে দিকনির্দেশনা পায়, তা তাই আবার পুনরুৎপাদন করতে থাকে।

এসব নিয়োগ আরও ক্ষতিকর নতুন বিশ্ববিদ্যালয় বা নতুন বিভাগের ক্ষেত্রে। শুরুতেই যদি কোনো বিভাগ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বল ভিত্তি তৈরি হয়, তাহলে তার ভবিষ্যৎ গতি ঠিক করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। সেটাই ঘটছে। ভুল শিক্ষক নিয়োগের পেছনে তিনটি কারণ শনাক্ত করা যায়- ১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের ক্ষমতার প্রভাব-গ্রুপ দলাদলি-ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিবেচনা; ২. সরকারি দলের সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা এবং ৩. নিয়োগের ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও আর্থিক লেনদেনের কথা উঠছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক তৎপরতা দ্রুত বাড়ছে। একের পর এক উইকএন্ড এবং ইভনিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে তৈরি হচ্ছে একের পর এক প্রাইভেট বা বাণিজ্যিক বিভাগ। শিক্ষা ও গবেষণার চাইতে অর্থ উপার্জন, টাকার পেছনে ছোটা তাই অনেক ক্ষেত্রে প্রধান প্রবণতা। দুর্নীতি-অনিয়ম জায়গা পাচ্ছে এখানেই। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিশ্বব্যাংকের ঋণে এবং তাদের ছকে প্রণীত ২০ বছরমেয়াদি কৌশলপত্রের ধারাবাহিকতায় উচ্চশিক্ষার 'মানোন্নয়নে' বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

এসব কর্মসূচি অর্থ বরাদ্দ ও অর্থব্যয় নিয়ে যতটা ব্যস্ততা তৈরি করে, ততটা শিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে নয়। বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন যেমন ভবন, অঙ্গসজ্জা, এসি ইত্যাদিতে ব্যস্ততা বেড়েছে; বরাদ্দ অনুযায়ী উচ্চদরে নানা কিছু কেনাকাটা, সেগুলোর ভাউচার সংগ্রহ আর হিসাব মেলানো অনেকের এখন প্রধান ব্যস্ততা। অপ্রয়োজনীয় ব্যয়বহুল তদারকি, বানানো রিপোর্ট লেখা এবং একই জায়গায় ঘুরপাক খাওয়া, মাঝে কিছু লোকের অর্থ উপার্জনের অভ্যাস তৈরি, এগুলোই প্রধান কাজ।

কোন বিভাগের কী প্রয়োজন তা নয়, কারা ভালো প্রজেক্ট জমা দিতে পারল,সেটাই এসব প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের প্রধান পথ। কেনাকাটা শেষ, রক্ষণাবেক্ষণের বাজেট নিয়ে টানাটানিতে দামি যন্ত্রপাতি অচল হয়ে পড়ার ঘটনা অনেক পাওয়া যাবে। স্বাধীন কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালালে এর মধ্যে অনেক অনিয়ম ধরা পড়বে। বলাই বাহুল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আনতে পারেনি এসব কর্মসূচি।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশ্বব্যাংক দর্শনে পরিচালিত এসব সংস্কারের মূল লক্ষ্য শিক্ষা খাতে রাষ্ট্রীয় ব্যয় আরও কমানো। এগুলোকে ক্রমান্বয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। সে জন্য কথা না শুনলে বা সরকারের পছন্দমতো না চললে 'টাকা বন্ধ করে দেওয়া হবে' বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে যে হুমকি দেওয়া হয়, তা দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের অংশ। অন্যায়ের প্রতিবাদকে সরকার দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অপরাধ হিসেবে। আসলে সরকারের টাকা বলে কিছু নেই।

সরকারও চলে জনগণের টাকায়। যেহেতু পাবলিক বা সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের টাকায় চলে, সে জন্য এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব দেশ ও জনগণের স্বার্থে শিক্ষা ও গবেষণা পরিচালনা করা। যদি পাবলিকের প্রতিষ্ঠানে কোনো অনিয়ম হয়, তাকে মেনে নেওয়া নয়; প্রতিবাদ করাই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব। যদি পাবলিকের টাকায় চলা সরকার অন্যায় করে, তার প্রতিবাদ করা সব নাগরিকেরই দায়িত্ব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আরও বেশি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার জায়গা; অনুগত বাহিনী তৈরির জায়গা নয়। আর জ্ঞানের পূর্বশর্ত প্রশ্ন করা, স্বাধীনভাবে চিন্তা ও সক্রিয়তার যোগ্যতা অর্জন করা।

লেখক : আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0071358680725098