উচ্চশিক্ষার জন্য ভিনদেশে পাড়ি জমাতে চান—এমন অনেকেরই প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র। স্বপ্নের দেশটিতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে কী করতে হবে, সুযোগ পেলে কী করতে হবে—এ নিয়ে আমেরিকান সেন্টারে ১৯ জুলাই হয়ে গেল এক অন্য রকম আয়োজন। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের ওরিয়েন্টেশন প্রগ্রাম উপলক্ষে এ আয়োজন করে মার্কিন দূতাবাস। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট জানান, যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে নবম। গত পাঁচ বছরে সে দেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশির সংখ্যা বেড়েছে ৫৩.৫ শতাংশ। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলোতে পড়ালেখা করার জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া সঠিক হওয়া চাই।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায় বারিধারার আমেরিকান সেন্টারে। প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখার তথ্য ও পরামর্শ মিলছে এখানে। সেন্টারটির এডুকেশন ইউএসএ নামের শাখাটি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মসূচি সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে থাকে।
আমেরিকান সেন্টারের সমৃদ্ধ লাইব্রেরিতে নানা ধরনের বই, ম্যাগাজিন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটসেবা রয়েছে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনায় রয়েছে আমেরিকান কর্নার। ঢাকার ধানমণ্ডিতে রয়েছে এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি অ্যান্ড আর্টস।
পড়ালেখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহীদের প্রথমেই উচিত এডুকেশন ইউএসের পরামর্শ নেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপ্রক্রিয়া ও খরচের দিকটি ভালোভাবে বোঝা। এ টিম ভর্তির অন্তত এক বছর আগে আবেদনপ্রক্রিয়া শুরুর পরামর্শ দেয়। আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশির ভাগই আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে (ফল সেশন) শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে জানুয়ারি মাসেও (স্প্রিং সেশন) রয়েছে ভর্তির সুযোগ।
আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি প্রোগ্রামের জন্য শিক্ষার্থীকে ১২ বছর স্কুলজীবন (এইচএসসি বা ‘এ’ লেভেল উত্তীর্ণ) শেষ করতে হবে। গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি প্রোগ্রামের জন্য ১৬ বছরের সফল শিক্ষাজীবন (আমেরিকার ব্যাচেলর ডিগ্রির সমতুল্য) থাকা চাই।
মার্কিন মুলুকে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা চার হাজার ৮০০-এরও বেশি। ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীর পছন্দের বিষয়টি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় কি না, শিক্ষাব্যয় কত, বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেয় কি না, কোথায় অবস্থিত, ক্যাম্পাস কত বড়, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা আছে কি না এবং প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও স্বীকৃতি আছে কি না—এসব তথ্য জেনেই আবেদন করা উচিত। ভর্তির আগেই ভাষা দক্ষতার সনদের জন্য টোফেল বা আইইএলটিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। ভর্তি আবেদন ফরম সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবে। পূরণ করা ফরম ও অন্যান্য ডকুমেন্ট (সার্টিফিকেট, মার্কশিট, শিক্ষা ও জীবনযাপনের ব্যয় নির্বাহে সক্ষমতা আছে—এমন সার্টিফিকেট) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরাসরি পাঠাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাধারণত আবেদনের তিন থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে আবেদনকারীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
আমেরিকান সেন্টার জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে এক বছর পড়ালেখায় কত অর্থ প্রয়োজন—তা নির্ভর করে শিক্ষার্থী কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে তার ওপর। বছরে টিউশন ফি ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য খরচ চালানোর জন্য আরো ৬ থেকে ১২ হাজার ডলার লাগতে পারে। আবেদনকারীর ফিন্যানশিয়াল স্পন্সরকে জোরালো আর্থিক সক্ষমতা দেখাতে হয়। সাধারণত স্পন্সর হন মা-বাবা বা পরিবারের সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক তথ্যের জন্য ই-মেইলে ([email protected]) যোগাযোগ করা যেতে পারে। এ সম্পর্কে আরো তথ্য পাওয়া যাবে www.facebook.com/EdUSABangladesh ও www.facebook.com/bangladesh.usembassy ফেসবুক পেজে। চোখ রাখতে পারেন educationusa.state.gov ও www.iie.org/OpenDoors ওয়েবসাইটে।