ফুটবল খেলার জীবন্ত কিংবদন্তী লিওনেল মেসি। সর্বকালের সেরা ৪ খেলোয়াড়ের নাম নিলে তার নাম তাতে অবশ্যম্ভাবী। বাকি তিনজন যে পেলে, ম্যারাডোনা আর রোনালদো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ফুটবল খেলে যত পুরস্কার পাওয়া সম্ভব তার প্রায় সবই সাজানো মেসির শোকেসে। মানুষ তাকে তার অবিশ্বাস্য ফুটবল দক্ষতা আর দলের প্রতি নিবেদনের জন্য ভালবাসে।
মেসির ভক্ত পুরো বিশ্বজুড়ে। আজকের ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার যুগে এই আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর সম্পর্কে জানেনা এমন কম মানুষই আছে। তবু কিছু বিষয় হয়তো অনেকের অজানা, এমন ১১টি তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো:
১। রোগের সঙ্গে লড়তে মেসির পাশে দাঁড়িয়েছিল বার্সা
এই বিষয়টা হয়তো অধিকাংশ ফুটবলভক্ত জানেন যে শিশু মেসির হরমোনজনিত (গ্রোথ হরমোন) সমস্যা ছিল। এই সমস্যা তার উচ্চতয় প্রভাব ফেলে। প্রায় তিন বছর তার পায়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে হরমোন প্রবেশ করানো হয়। প্রতি মাসে এই চিকিৎসা বাবদ ১৫০০ মার্কিন ডলার খরচ হয়, যা বার্সেলোনা বহন করে।
২। যে পেপার ন্যাপকিন ফুটবলের ইতিহাস পাল্টে দিয়েছিল
গোলের পর গোল করে ফুটবল খেলার বহু রেকর্ড নতুন করে লিখিয়েছেন মেসি। কিন্তু তার ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছিল এক টুকরো ন্যাপকিনে লেখা চুক্তিতে!
বার্সেলোনার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি কার্লোস রেক্সাচ মাত্র ১৩ বছর বয়সী শিশু মেসির ফুটবল প্রতিভায় এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে ওই সময় হাতের কাছে কাগজ না থাকায় এক টুকরো পেপার ন্যাপকিনে লিপিবদ্ধ ও স্বাক্ষরিত করেছিলেন বার্সা ও ফুটবলবিশ্বের ইতিহাস পাল্টে দেওয়ার মতো এক চুক্তি।
চুক্তি স্বাক্ষরিত ওই পেপার ন্যাপকিন এখনও বার্সায় সংরক্ষিত রয়েছে।
৩। ভোজন রসিক
সেই শৈশব থেকেই মেসি ভোজন রসিক। তবে খুব সাধারণ খাবার তার পছন্দ। তার পছন্দের খাবার ‘মিলানেসা নাপোলিতানা’ (পনির, পেঁয়াজ এবং টমেটো দিয়ে তৈরি এক ধরনের খাবার)।
৪। ঐতিহ্যের বৈচিত্র্য
মেসি ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী। তার পিতা ইতালি থেকে আর্জেন্টিনায় দেশান্তরি হন। আর তার মা লেবানিজ বংশোদ্ভূত। তার কয়েকজন আত্মীয় ইংল্যান্ড থেকেও আর্জেন্টিনায় পাড়ি দিয়েছেন।
৫। ইউনিসেফের গুভেচ্ছাদূত
২০১০ সালে ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যোগ দেন মেসি। তিনি তার জনপ্রিয়তা এবং প্রভাব কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করেন।
৬। ট্যাটুর প্রতি ভালবাসা
মেসি ট্যাটু ভালবাসেন। তার বাঁ কাঁধে তার মায়ের চেহারার আদলে ট্যাটু আঁকা। ডান কাঁধে নিজের ছেলের নামাঙ্কিত ট্যাটু করিয়েছেন তিনি।
৭। গোল স্কোরিং
২০১২ সালে এক মৌসুমে ৮৬ গোল করে ১৯৭২ সালে গড়া জার্মান গ্রেট জার্ড মুলারের ৮৫ গোলের রেকর্ড ভাঙেন মেসি। সেবার কোপা দেল রে’তে ৩ গোল, চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৩ গোল, লা লিগায় ৫৬ গোল, স্প্যানিশ সুপার কাপে ২ গোল আর আর্জেন্টিনার হয়ে ৯ গোল করেন এই বার্সা তারকা।
৮। মেসির উদযাপন
গোল করার পর একটি বিশেষ ভঙিমায় উদযাপন করেন মেসি। অনেকেই হয়তো জানেন না যে দুই হাত তুলে আকাশের দিকে ইশারা করে তিনি যে উদযাপন করেন তা আসলে কার উদ্দেশ্যে। আসলে দাদিকে উৎসর্গ করে এমন উদযাপন করেন তিনি। তার দাদিকে অনেক আগেই হারিয়েছেন তিনি।
৯। ফোনে কথা বলায় অরুচি
খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ফোনে কথা বলেন না মেসি। তার সঙ্গে সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে এসএমএস কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ।
১০। মাতাল ভাষা
কাতালান ভাষা বেশ ভালই বুঝেন মেসি। কিন্তু এই ভাষায় তিনি তখনই কথা বলেন যখন তিনি মাতাল অবস্থায় থাকেন।
১১। প্লে-স্টেশনের ভক্ত
মেসি প্লে-স্টেশনের দারুণ ভক্ত। মাঠ এবং পরিবারের বাইরে অবসর পেলেই ঘন্টার পর ঘণ্টা তিনি প্লে-স্টেশনে গেম খেলে সময় কাটান।