এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর অভিভাবকদের ভাবনায় পড়তে হয় তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনা নিয়ে। এতে ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিতে তাঁদের দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছোটাছুটি করতে হয়। এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে আট লাখ এক হাজার ৭১১ জন। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৯৬৭ জন। বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৩৭টি। তাদের আসন সংখ্যা ৪৭ হাজার ৬৩৬। এইচএসসি উত্তীর্ণদের প্রথম টার্গেট থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি। একদম ভালো শিক্ষার্থীরা চায় মেডিক্যাল, ডেন্টাল ও বুয়েটে ভর্তি হতে। এসব প্রতিষ্ঠানের আসন সংখ্যা মোট ৫২ হাজার। মূল প্রতিযোগিতা এই আসনগুলোর ওপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে অর্থ ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়।
রাস্তায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। বিভিন্ন মহল থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে দাবি উচ্চারিত হয়ে আসছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। ২০১৬ সালের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইউজিসি মাসিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তরের সময়ও তিনি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অগ্রগতি জানতে চান। এ ব্যাপারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার চিঠি দিয়ে মিটিংও আহ্বান করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনাগ্রহের কারণে বিষয়টি আর এগোয়নি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি ফরম বিক্রি করে অঢেল অর্থ উপার্জনের বিষয়টিতে জড়িত। রাষ্ট্রপতি হলেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। তিনিই একমাত্র সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিতে বাধ্য করাতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্র সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারলে আমরা কেন পারব না? যদি তা-ই না হয় সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ভর্তি পরীক্ষা এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য আলাদা একটি ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা যেতে পারে।
মিজানুর রহমান
বানাসুয়া, কুমিল্লা।