করোনা ভাইরাসে মহামারি তাণ্ডবে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। এ নিয়ে প্রতিদিনই আঁৎকে ওঠার মতো তথ্য দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য বিধি থেকে সামাজিক দূরত্ব সব কিছুই নিয়ম মেনে করতে বলছে সংস্থাটি।
শুধু তাই নয়, মাস্ক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম পালনে সতর্ক করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাস্ক পরাটাও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সম্প্রতি সংস্থাটি বলছে, মাস্ক পরে শরীরচর্চা, প্রাতঃভ্রমণ বা জগিং করবেন না। মাস্ক পরে এসব কাজ করলে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেন কমে তা আরও স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খুব ভারী কাজ ও অতিরিক্ত দৈহিক পরিশ্রম হয়, এমন কাজের সময় মাস্ক পরলে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের স্বাভাবিক ছন্দ বিঘ্নিত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে তখন অস্বাভাবিক ক্লান্তি দেখা দেয়। পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অংশের পেশিতে টান পড়া, খিঁচুনি, বমি ভাব, মাথা ঘোরানো, এমনকি স্ট্রোক পর্যন্ত হতে পারে। তাই এসব কাজ করার সময় মাস্ক ব্যবহার করবেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দৈহিক পরিশ্রমের সময় মাস্ক পরে থাকা যাবে না। তবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে, এমন জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
তবে শরীরচর্চা করলে একেবারে নির্জন স্থানে করতে হবে। যেখানে কারও কাছ থেকে দেহে জীবাণু প্রবেশের সম্ভাবনা থাকবে না।
এদিকে, করোনা মহামারির সার্বক্ষণিক হিসাব রাখা ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, শুক্রবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ৭২ লাখ ২৫ হাজার মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ৫8 হাজার মানুষের।
সংক্রমণ ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র এখনো শীর্ষ দেশ। গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩২ লাখ ছুঁই ছুঁই। মৃত্যু ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলেও। দেশটিতে ১৭ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। করোনায় মারা গেছেন ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ।
সংক্রমণ ও মৃত্যুতে তৃতীয় শীর্ষ দেশ দক্ষিণ এশিয়ার ভারত। এ দেশেও সংক্রমণের বিস্ফোরণ ঘটেছে যেন। কয়েক দিন ধরে প্রতিদিনই ২০ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দৈনিক মৃত্যুও ৫০০ জনের আশপাশে থাকছে। এর মধ্যে ৪ জুলাই মারা যান ৬১০ জন, যা এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। ভারতে ৭ লাখ ৮০ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ২১ হাজারের বেশি।