রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৩ জন নেতাকর্মীকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। এদের মধ্যে ১২ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ১২ থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে তাদের আটক করা হয়।
ছাত্রশিবিরের ১৩ জন শিক্ষার্থী হলেন, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের আশিকুল হাসান নাফিস, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য মাস্টার্সের আরিফুল ইসলাম, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রাকিব আহমেদ, উদ্ভিদবিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের মাহমুদুল হাসান, পরিসংখ্যান চতুর্থ বর্ষের শরীফুল ইসলাম, শামসুজ্জোহা হল শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের জাকির হোসেন, পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শাহানুর আলম হিমেল, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সাহেব রানা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আব্দুর রাকিব, আরবি সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের নাবিউল ইসলাম, অলিউল ইসলাম, আবু জাফর এবং দ্বিতীয় বর্ষের গোলাম রাব্বানী। এদের মধ্যে শুধু আবু জাফরকে বুধবার সকাল ৬টায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল থেকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। বাকিদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন জিহাদী বই, শিবিরের নথি, দুটি কম্পিউটারসহ নগদ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আটকের পর ১৩ জনকে মারধর করা হয়। পরে ভোর ৪টার দিকে তাদের মতিহার থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘গোয়েন্দা ও প্রশাসনে কাছ থেকে জানতে পেরে আমরা সোহরাওয়ার্দী হলের সাহেব রানা ও নাবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিবিরের সাথে সম্পৃক্ততা থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা হলের বেশ কয়েকটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে ১২ জন ও সকালে আরও একজনকে আটক করে পুলিশে দেই’
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মাহবুব হোসেন বলেন, ‘অভিযান চালানোর সময় আমরা হলে উপস্থিত ছিলাম, কিন্তু হল প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় আমরা অভিযানে অংশ নেইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই রাতে ১২ এবং ভোরে একজন শিবিরের নেতাকর্মীকে আটক করে আমাদের হাতে দিয়েছে। আটকরা অধিকাংশই শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আমরা তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজনকে থানায় পাঠিয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’