মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা টেকনাফ উখিয়ার ৩০ ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা শিশুদের অবৈধভাবে বাংলা ভাষায় পাঠদান করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা পাঠ্যবই না পড়ানোর জন্য সরকারি নির্দেশ রয়েছে। কিছুসংখ্যক এনজিও সরকারের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে রাখাইন রাজ্য থেকে অনুপ্রবেশকারী ওই রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা পাঠ্যপুস্তক পড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে ২৩টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বাংলা শিক্ষা দিচ্ছে এনজিও সংস্থা ‘কোডেক’। এতে খুশি রোহিঙ্গারা। আশ্রয় শিবিরে শিশুদের বাংলা ভাষায় শিক্ষাগ্রহণ করাতে আগ্রহী রোহিঙ্গা অভিভাবকরা। যাতে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নাগরিক বলে দাবি করা যায়। রোহিঙ্গাদের বাংলা ভাষা শিক্ষা দেয়া এটি দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। রোহিঙ্গাদের সরকারি পাঠ্যবই প্রদান ও শিক্ষা দেয়ায় প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে স্থানীয় যুবসমাজ। কুতুপালং ক্যাম্পে কোডেকের ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলছে বাংলায়। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশ্ন-সরকারি পাঠ্যপুস্তক কোথায় পেল এনজিওরা? এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার বলে জানান তারা। ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চলছে বাংলা। আর ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও বাংলা বই নিয়ে চলছে নিয়মিত পাঠদান। কোডেকের পক্ষ থেকে ওসব বিদ্যালয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়মিত পাঠদান দেয়ার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গার পাশাপাশি স্থানীয় ছেলেমেয়েদের।
সূত্র জানায়, সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে, রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা ভাষায় কোনো পাঠদান চলবে না। ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে এনজিও কোডেক রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে বাংলা পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, রোহিঙ্গাদের লালন পালনে কিছু এনজিও অতিদরদ দেখিয়ে চলেছে।
অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা অফিস থেকে কৌশলে এনজিও প্রতিনিধিরা সরকারি বইগুলো সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করেছে। কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (কোডেক) ছাড়াও আরও কয়েকটি এনজিও শিবির অভ্যন্তরে পাঠশালা খুলে রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলা পাঠ্যবই শিক্ষা দিয়ে চলেছে। বাংলাভাষা বন্ধ করার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, এটি তো আর একদিনে সম্ভব নয়, পর্যায়ক্রমে করতে হবে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, রেজিস্ট্রার্ড বা আনরেজিস্ট্রার্ড কোন ক্যাম্পে রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েদের বাংলা শিক্ষা দেয়া যাবে না।
সূত্র: জনকণ্ঠ