রাজশাহীর বিনোদপুর ও মেহেরচণ্ডি এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে শিবির সন্দেহে আটক চার জনকে নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৮ই আগস্ট) দুপুরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান আকাশ, কোচিং করতে আসা ভর্তিচ্ছু রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আবু রুমান, বিনোদপুর ইসলামিয়া কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আনিসুর রহমান ও আমিনুল ইসলাম।
ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ‘নাশকতা সৃষ্টি ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাসে হঠাৎ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ককটেল বিস্ফোরণ এবং আবাসিক হলগুলোতে ছাত্রলীগের শিবিরবিরোধী মিছিলের কারণে পুরো ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো ফটকে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র, ব্যাগ ইত্যাদি চেক করেন পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। সন্ধ্যার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ। এসময় হলগুলোর গেট আটকে রাখা হয়।
এরই মধ্যে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের প্রথম ও দ্বিতীয় ব্লকের মাঝখানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এতে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের মিছিল হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে শিবির-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যেকোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোন পক্ষ কিংবা বহিরাগতরা এসে যেন ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাও তৎপর আছে।’
গত ৮ আগস্ট রাতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে রাতভর অভিযান চালিয়ে শিবিরের ১২ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার ৬ ঘণ্টা পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে ‘সমুচিত জবাব’ দেয়ার হুমকি দেয় রাবি শিবির। এর পর থেকেই ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কায় ক্যাম্পাসে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।