শিক্ষার আলো জ্বালাতে বয়সের প্রয়োজন হয় না। তা প্রমাণ করলেন যশোরের অভয়নগর উপজেলার আলেয়া বেগম নামে ৬০ বছর বয়সী এক নারী। সঠিক সময় শিক্ষ গ্রহণ করতে না পারেলও বর্তমানে তিনি নিজের নাতির সাথে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা শুরু করেছেন। সরেজমিনে উপজেলার মহাকাল বিসিসি মহিলা মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, আলেয়া বেগম শিশু শ্রেণিতে তাঁর নাতি রহিমের সামনের একটি বেঞ্চ বসে বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছেন।
উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মোহাম্মদ আলী শিকদারের স্ত্রী আলেয়া বেগম পরীক্ষা শেষে জানান, এক ছেলে ও দুই মেয়ের মা তিনি। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামী ও ছেলের সংসারে বসবাস তাঁর। দরিদ্র পরিবারে জন্ম হওয়ায় অভাবের তাড়নায় পড়ালেখা করতে পারেননি।
একমাত্র ছেলের ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসার সময় পড়ালেখা করার চিন্তা মাথায় আসে তাঁর। বয়সের কথা চিন্তা না করেই নাতির স্কুলের শিক্ষক শাহনাজ বেগমের কাছে নিজের ইচ্ছার কথা জানান। আলেয়া বেগমের পড়ালেখার আগ্রহ দেখে ওই শিক্ষক চলতি বছর ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে তাঁকে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন।
পরীক্ষা কেমন হয়েছে জানতে চাইলে আলেয়া বেগম বলেন, সব প্রশ্নের উত্তর খাতায় লিখেছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আর কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি নাতিকে নিয়ে বাড়ির পথ ধরেন।
শিক্ষক শাহনাজ বেগম বলেন, শিক্ষা গ্রহণের বয়স লাগে না, ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন হয়। যা প্রমাণ করেছেন আলেয়া বেগম। ভীতি ও লজ্জাকে পেছনে ফেলে নাতির সাথে স্কুলে আসার মধ্য দিয়ে শিক্ষা অর্জন করার চেষ্টা করছেন আলেয়া বেগম।