দেশব্যাপী অব্যাহত শিশু হত্যা, নির্যাতনসহ নির্মম পাশবিকতা রোধে দোষীদের দ্রুত বিচার ও রায় কার্যকর করার পাশাপাশি সামাজিকভাবে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বাান জানিয়েছে জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর।
শনিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খেলাঘর আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচী থেকে এ আহ্বান জানান সংগঠকরা।
দেশব্যাপী অব্যাহত শিশু হত্যা, নির্যাতনসহ নির্মম পাশবিকতার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ জেলায়-জেলায় প্রতিবাদী কর্মসূচীর ডাক দেয় সংগঠনটি। এ দিন খেলাঘরের শাখা ও জেলা সংগঠন স্থানীয়ভাবে মানববন্ধন, মৌন মিছিল, অবস্থানসহ নানা প্রতিবাদী কর্মসূচী পালন করে।
কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীতে আয়োজিত কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা কেউ এর দায় এড়াতে পারি না। আমাদের সকলের উচিত শিশুদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সুন্দর ও নিরাপদ শৈশব নিশ্চিত করা। শিশুদের বেড়ে ওঠার পরিবেশ যদি আতঙ্কের হয় তাহলে তাদের বিকাশও বাধাগ্রস্থ হবে। ভবিষ্যতে সুন্দর জাতি গঠনে বিরুপ প্রভাব ফেলবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলাতে না পেরে নতুন প্রজন্ম পিছিয়ে পরবে।
দেশব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ ও নতুন করে আইন সংশোধনের পরও একের পর এক নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে খেলাঘর নেতারা বলেন, অনেক দেশ মৃত্যুদণ্ডের বিরোধীতা করলেও এসব অপরাধ দমনে কঠোর আইনের বিকল্প নেই। পাশাপাশি শিশুদের ওপর জঘন্যতম অপরাধ দমনে সামাজিকভাবে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পাড়ায় পাড়ায় জেগে ওঠতে হবে অভিভাবকদের। তাহলে অপরাধীরা ভয় পাবে।
শিশুদের নিরাপত্তার জন্য অভিভাবকদের আরও বেশি যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খেলাঘর নেতরা বলেন, আপনার শিশুকে কার কাছে দিচ্ছেন, বাবা মায়েদের সেদিকে নজর রাখা উচিত। তাছাড়া আপনার শিশু কোথায় যাচ্ছে, কোন পরিবেশে মিশছে, কোথায় সময় কাটাচ্ছে তা দেখভালের দায়িত্ব নিজেদের নিতে হবে।
মানববন্ধনে রাজধানীর বিভিন্ন শাখা আসর, ঢাকা মহানগর কমিটি, কেন্দ্রীয় সংগঠকরা অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘরের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহিদ। বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রণয় সাহা, হান্নান চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুনীল সরকার, সাহাবুল ইসলাম বাবু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাংবাদিক রাজন ভট্টাচার্য, আসমা আব্বাসি উর্মি, আশরাফ খোকনসহ অনেকে।
আইন সালিশ কেন্দ্র (আসক) গত ৯ মাসে শিশু নির্যাতন ও হত্যার পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক উল্লেখ করে বলছে, এ সময়কালে এক হাজার ৭৮ শিশু শারীরিক নির্যাতনসহ নানা সহিংসতা ও হত্যার শিকার হয়েছে ৪৪৫ শিশু। এছাড়া ৬২৭ শিশুর ওপর পাশবিক নির্যাতন হয়েছে।