সংস্কারের অভাবে ও নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের দুটি ছাত্রাবাস দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রয়েছে। ছাত্রাবাস দুটির ভবনের ছাদে, দেয়ালে ও কার্নিশে আগাছা জন্মেছে এবং স্যাঁতসেতে হয়ে শিক্ষার্থীদের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তাদেরকে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন মেসে থাকতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে ওই দুটি ছাত্রাবাস সংস্কার করে খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, নগরীর কোটবাড়ি এলাকায় ১৯৬২ সালে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট স্থাপিত হয়। এখানে সিভিল টেকনোলজি, পাওয়ার টেকনোলজি, ইলেক্ট্রিক্যাল টেকনোলজী, ইলেক্ট্রিক টেকনোলজী, কম্পিউটার টেকনোলজি, মেকানিক্যাল টেকনোলজী ও রিলেটেড সাবজেক্ট ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। এসব বিভাগে প্রায় ৪২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। এ প্রতিষ্ঠানে ৭২ জন শিক্ষক ও ৬২ জন কর্মচারী রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য তিনটি ছাত্রাবাস থাকলেও ছাত্রীদেরটি ছাড়া অন্য দুটি প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শহীদুল্লাহ আবু ইউসুফ খান ছাত্রাবাস ও ময়নামতি আলমগীর ছাত্রাবাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের এ ২টি ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এরপর থেকে আজও হোস্টেল দুটি বন্ধ রয়েছে। এ ভবনের দেয়ালের পলেস্তারা ক্রমান্বয়ে খসে পড়ছে। এছাড়া তিন তলার পুরনো দুটি ভবনের ছাদে, দেয়ালে ও কার্নিশে জন্মেছে আগাছা।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকার লোকজন জানায়, ছুটির দিনে স্থানীয় এলাকার মাদকসেবীরা ক্যাম্পাসের ঝোপে ঢুকে মাদক সেবন করে থাকে। এছাড়া এ ইন্সটিটিউটের পশ্চিমে ময়নামতি জাদুঘর সড়কের পাশে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সড়কের পার্শ্ববর্তী আবাসিক লোকজন প্রতিদিনই আবর্জনা ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে। এতে একাডেমিক ভবনসহ ৬টি ওয়ার্কশপে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধ উপেক্ষা করে বাধ্য হয়ে নাকে রুমাল দিয়ে শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে বিগত দুই বছর যাবত দুটি ছাত্রাবাস বন্ধ রয়েছে। তারা অবিলম্বে এ দুটি ছাত্রাবাস সংস্কার করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের জন্য খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
কুমিল্লা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. বাবর আলী জানান, সংস্কারের অভাবে পুরনো ছাত্রাবাস দুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। ছাত্রাবাস সংস্কারসহ অন্যান্য বিষয়ে বরাদ্দ প্রদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।