জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫০তম জন্মদিন আজ সোমবার। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জুলাই রাত ৮টায় অবরুদ্ধ ঢাকায় তার জন্ম। স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের পর তার নাম জয় রাখেন নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মেধা ও তারুণ্যের প্রতীক জয় দেশের খ্যাতনামা পরমাণুবিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হওয়ার সময় বাবা এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও মা শেখ হাসিনার সঙ্গে জার্মানি ছিলেন জয়। '৭৫-পরবর্তী সময়ে লন্ডন হয়ে মায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভারতে চলে যান তিনি। ফলে তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ভারতে। সেখানকার নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক শেষ করেন জয়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে বসবাস যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায়।
ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে খ্যাতি রয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ ধারণাটি তার উদ্যোগেই যুক্ত হয়েছিল। দেশের মানুষ এই ধারণা ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেন। ফলে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা ছিল জয়ের। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে গত তিন মেয়াদে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তরুণ এই কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
ছাত্রজীবনে রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত থাকলেও জয় সক্রিয় রাজনীতিতে নাম লেখান ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে। ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়া হয় তাকে। যার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন তিনি। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন তিনি। ওই নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ ও দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করেন। যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও বেশ ভালো প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম হন তিনি। এরপর ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর তাকে অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর জয়কে একই পদে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দেওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
জয় ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন। তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। নাম সোফিয়া ওয়াজেদ।