সরকারি কবে হবেন শিক্ষকেরা - দৈনিকশিক্ষা

সরকারি কবে হবেন শিক্ষকেরা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রতাপ কুমার মণ্ডল পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। কলেজটি সরকারি হয়েছে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে। কিন্তু প্রতাপ মণ্ডলের চাকরি এখনো বেসরকারিই রয়ে গেছে। শিক্ষকেরা সরকারি না হওয়ায় কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতনও নেয়া হচ্ছে বেসরকারি হিসেবেই। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মোশতাক আহমেদ।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, বেসরকারি থেকে সরকারি হওয়া সারা দেশের ৩০২টি কলেজেই এখন প্রায় একই অবস্থা । এসব কলেজের প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর চাকরি দীর্ঘদিনেও সরকারি হচ্ছে না। ফলে কলেজ সরকারি হলেও এর সুবিধা পাচ্ছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সরকারি হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষক প্রতাপ মণ্ডল সম্প্রতি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন শতাধিক কলেজ আত্তীকরণ (শিক্ষকদের) করতে না পারলে আবার ব্রত্রকারি
করে দাও। লেখাপড়া ধ্বংস করে দিও না।’ তিনি বলেন, কলেজ সরকারি হলেও শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি না হওয়ায় নানামুখী সমস্যা হচ্ছে। অনেককে সরকারি সুবিধা না নিয়েই চাকরি থেকে অবসরে যেতে হচ্ছে। যেমন, তার বিভাগেরই একজন শিক্ষক তাদের কলেজ সরকারি হওয়ার পর অবসরে গেছেন। আর চলতি বছর কলেজের পাঁচজন শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন।

নিয়মানুযায়ী চাকরিতে থাকা শিক্ষকেরাই কেবল সরকারি সুবিধা পাবেন। কিন্তু সরকারি হওয়া এসব কলেজের শিক্ষকেরা নিয়মিত অবসরে যাচ্ছেন সুবিধাবঞ্চিত হয়ে। সরকারি হওয়া কলেজশিক্ষকদের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে কলেজগুলো সরকারি হওয়ার পর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫০০ শিক্ষক অবসরে গেছেন। তারা কেবল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মতো সুবিধা পাচ্ছেন।

দেশের যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি কলেজ ছিল না, সেগুলোতে একটি করে বেসরকারি কলেজকে সরকারি করেছে সরকার। জাতীয়করণ বা সরকারি করার এই কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে। তবে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে সারা দেশের ২৭১টি বেসরকারি কলেজকে সরকারি করা হয়। এ ছাড়া কাছাকাছি সময়ে আরও ৩১টি কলেজকে সরকারি করা হয়। সরকারি হওয়া মোট কলেজ ৩০২টি। এগুলোসহ সব মিলিয়ে দেশে এখন মোট সরকারি কলেজ ৬৩২টি।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বেসরকারি কলেজ সরকারি হলে পদ সৃষ্টি ও পদায়নের স্বার্থে ওই সব কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি সরকারি করার জন্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন ও অর্থসহ কয়েকটি দপ্তরের অনুমোদন নিতে হয়। প্রথমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমে যাচাই হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি সূত্রে জানা গেছে, মাউশি দীর্ঘ সময় নিয়ে ওই সব কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে সম্প্রতি ৩০০টি কলেজের তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। দুটির তথ্য বাকি। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার যাচাই করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর কাজ করছে। জনপ্রশাসনের অনুমোদন পেলে আবার সেটি যাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

সরকারি হওয়া এসব কলেজের শিক্ষকেরা বলছেন, তারা মনে করছেন যাচাই-বাছাইয়ের কাজটি হচ্ছে একেবারে ধীরগতিতে। ইচ্ছা করেই তা করা হচ্ছে। প্রথমে মাউশিতেই দীর্ঘ সময় লাগানো হয়েছে। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাচাইয়ের নামে কালক্ষেপণ শুরু হয়েছে। যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে আর কত দিন লাগে, সেটিই এখন তাদের আশঙ্কার বিষয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাউশি থেকে ৩০০টি কলেজের তথ্য পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় ৪৪টি কলেজের তথ্য যাচাই করতে পেরেছে। এগুলো এখন যাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে এই কাজটি শেষ হতে আরও দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কলেজ) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার বলেন, কবে নাগাদ শিক্ষকদের চাকরি সরকারি হবে, সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাছবিচার করে তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাচ্ছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মার্চের মধ্যে সব কলেজের প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির একাধিক কর্মকর্তা ঝামেলা আছে। আবার অনেকের কাগজপত্রেও ঘাটতি রয়েছে। এসব কারণেই যাচাই-বাছাইয়ে সময় একটু লাগছে।

জাতীয়করণ হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষকদের সংগঠন সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান পাঠান প্রথম মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের পদ সৃষ্টি ও পদায়ন-প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আর নিয়োগ -প্রক্রিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক ত্রুটির কারণে নিয়োগ পাওয়া কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে আত্তীকরণ বা সরকারি হওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0078191757202148