সর্বাগ্রে প্রয়োজন অভিভাবকগণের সচেতনতা - Dainikshiksha

সর্বাগ্রে প্রয়োজন অভিভাবকগণের সচেতনতা

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

লেখাপড়া আর কোচিং যেনবা সমার্থক হইয়া গিয়াছে। ‘ছাত্র নং অধ্যয়নং তপঃ’ এই সুবচনের কাল বাসি হইয়াছে। এইকালে ছাত্র হইলে কোচিং অপরিত্যাজ্য। অভিভাবকগণেরও অনেকে শিক্ষার্থী সন্তানদের কোচিংয়ে পাঠাইতে অবিশ্রান্ত।

টাকা-পয়সা কী যায়, যাক; তাহা লইয়া ভাবিবার ফুরসত তাহাদের নাই। কোচিংটাই আসল, স্কুল বা কলেজের ক্লাস নামকাওয়াস্তে! কোচিংয়ের সঙ্গে প্রাইভেট টিউটরেরও ব্যবধান অনেকটাই। নীচের ক্লাসে ছেলেমেয়েদের গৃহশিক্ষক রাখিয়া দিবার রেওয়াজ ছিল সেই বহুকাল আগে হইতেই।

তবে উহা ক্লাসের লেখাপড়ার বিকল্প ছিল না, বরং বাড়িতে পড়াশোনা দেখাশোনাটাই ছিল গৃহশিক্ষকগণের মূল কাজ। কাজেই অতীতের গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে কোচিং বাণিজ্যকে গুলাইয়া ফেলিবার কোনো সুযোগ নাই। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কোচিং এখন বেপরোয়া, সর্বগ্রাসী রূপ গ্রহণ করিয়াছে।

রাজধানী শহর হইতে শুরু করিয়া উপজেলা পর্যন্ত, ক্ষেত্রবিশেষে প্রত্যন্ত গ্রামেও কোচিং বাণিজ্য শিকড় বিস্তার করিয়াছে। খবর পাওয়া গিয়াছে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় গড়িয়া উঠিয়াছে অসংখ্য কোচিং সেন্টার।

আর এইসব কোচিং সেন্টারের বেশির ভাগেরই মালিক-পরিচালক হইলেন স্থানীয় বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকগণ। আর, যাহারা নিজে কোচিং সেন্টার খুলিয়া বসিতে পারেন নাই, তাহারা অন্যের সেন্টারে নাম লেখাইয়া লইয়াছেন।

বাণিজ্যে ভাগ বসাইতে তাহারা ভুল করেন নাই। ছেলেমেয়েদের কোচিংয়ে ভর্তি হইতে বাধ্য করিবার জন্যও তাহাদের ছলের অভাব নাই। এই প্রকারে তাহারা শিক্ষার্থিগণের ভবিষ্যত্ ঝরঝরে করিয়া নিজেদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন করিয়া লইতেছেন।

তবু নাম তাহাদের শিক্ষক! কমবেশি একই অবস্থা দেখিতে পাওয়া যায় দেশের অন্য সকল অঞ্চলেই। নূতন শিক্ষা আইনে কোচিং-প্রাইভেট, গাইড-নোট নিষিদ্ধ করা হইয়াছে। শাস্তিরও ব্যবস্থা আছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হয় নাই কোথাও। না শহরে, না গ্রামে!

কোচিং ও গাইড-নোট বাণিজ্যের সহিত যাহাদের নিকট বা দূর সম্পর্ক রহিয়াছে, তাহাদেরও যুক্তির অভাব নাই। তাহারা বলেন, সৃজনশীল পদ্ধতির যে শিক্ষা, তাহা কোচিং গাইড ছাড়া চলিতে পারে না। বোর্ডের বইয়ে নাকি বিষয়গুলি পরিষ্কার নহে।

ক্লাসের শিক্ষকগণও নাকি সৃজনশীল জিনিসটা ভালোমত বুঝিতে পারেন না। বলিহারি যুক্তির বাহার! আসলে মন না বদলাইলে, কেবল আইন করিয়া কোচিং বন্ধ করা কঠিন। বাজারে যে পণ্য বা সেবার চাহিদা থাকিবে, সেই পণ্য বা সেবার জোগানেও খামতি পড়িবে না, ইহাই স্বাভাবিক।

অর্থশাস্ত্রের এই সূত্র অনুযায়ী অভিভাবক ও শিক্ষার্থিগণ যখন কোচিং সেবা লইতে উদ্গ্রীব, তখন কোচিং মার্কেটের সওদাগরগণই বা বসিয়া থাকিবেন কেন! কাজেই সময় আসিয়াছে অভিভাবকগণের সতর্ক হইবার।

সন্তানদের লইয়া এক কোচিং সেন্টার হইতে আরেক সেন্টারে ছোটাছুটি করিয়া লবেজান হইয়া গার্ডিয়ানশিপ দেখানো কোনো কাজের কথা হইতে পারে না।

ইহা কোনো স্ট্যাটাস সিম্বলও নহে। পক্ষান্তরে, যাহারা কোচিং নামক সেবার কৃত্রিম চাহিদা তৈয়ার করিয়া চলিয়াছেন, তাহাদের চিহ্নিত করিয়া আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা একান্ত কর্তব্য।

দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদকীয় থেকে নেওয়া

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00388503074646