শাহবাগে পুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে চোখের আলো নিভে যাওয়া তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনতে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার ( ১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২০ জুলাই ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের আন্দোলনে ঢাকার সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে পুলিশ আক্রমণ চালায়। এ সময় টিয়ার শেলের আঘাতে সিদ্দিকুরের চোখ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
তারা বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে পাঠানো হলেও সেখান থেকে খালি হাতেই ফিরে আসতে হয়ছে সিদ্দিকুরকে। আমরা সরকারের কাছে তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সব রকম ব্যবস্থা তথা উন্নততর চিকিৎসা প্রদানের আবেদন জানাচ্ছি।
তারা আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজে কোনো সেশনের ফরম ফিলাপ, পরীক্ষা গ্রহণ বা ফলাফল প্রকাশ না করায় অসহায় পড়েছেন ২ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একে অন্যের প্রতি কাঁদা ছুড়াছুঁড়ি করে সময় ক্ষেপণ করছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-
অজ্ঞাতনামা ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
সিদ্দিকুরের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা তথা উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা।
১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ আগস্ট এই দীর্ঘ মূল্যবান সময়ের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং অনার্স ২য় ও ৪র্থ বর্ষের ভাইভা, প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ।
কলেজগুলোর অনার্স ৩য় বর্ষ এবং মাস্টার্স শেষ পর্বের পরীক্ষার চূড়ান্ত রুটিন দ্রুত প্রকাশ এবং ২০১৪-১৫ সেশনের মাস্টার্স ফাইনাল এবং ২০১৩-১৪ সেশনের প্রিলিমিনারিতে ভর্তির কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা।
অনার্স ৪র্থ এবং ১ম বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণের সকল প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে এবং ডিগ্রি ৩য় এবং ১ম বর্ষ সেশনের পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ এগিয়ে আনতে হবে।
এ ছাড়া ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজে ২০১৭-১৮ সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তির সঠিক নীতিমালা প্রকাশ এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সেশনজট নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উল্লেখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেয়া না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মুখপাত্র রাশেদ মাহমুদ হাবিব, সমন্বয়ক বি এম শাহিন, শিক্ষার্থী বাইজিদ আহমেদ, সিফাতুর রহমান প্রমুখ।