সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। বিশ্বের বৃহৎ ম্যানগ্রোভ এ বনে বাঘের সংখ্যা ৫০টি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৪টিতে। প্রাকৃতিক এ বনের তিনটি ব্লকে চার ধাপে এক হাজার ৬৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপ করে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে বন বিভাগ দাবি করছে। গত ১৯ মার্চ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন বন অধিদপ্তরে জমা দিয়েছে। পরে ২২ মার্চ গবেষণা প্রতিবেদনটি পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। বুধবার (২৫ মার্চ) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মোস্তফা কাজল।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ওই জরিপ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাঘ বিশেষজ্ঞ আবদুল আজিজসহ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বন অধিদপ্তরে জমা দেয়া ওই প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে সুন্দরবনে ৬৩টি পূর্ণ বয়স্ক বাঘ, চারটি জুভেনাইল বাঘ (১২-১৪ মাস বয়সী) এবং পাঁটি বাঘের বাচ্চার (০-১২ মাস বয়সী) ২৪৬৬টি পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। আগামী ৭ এপ্রিল বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৫০টি বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের হিসাব মতে, সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে রয়েছে ১৪৪টি বাঘ। বন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চোরাকারবারি ও অবাধ শিকার বন্ধ হওয়ায় বাঘের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সুন্দরবনকে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা- এ তিন অংশে ভাগ করে যেসব এলাকায় বাঘ চলাচল বেশি সেখানে জরিপ পরিচালনা করা হয়। সাতক্ষীরা অংশে জরিপ করা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। পরে খুলনা ও বাগেরহাট অংশে জরিপ চালানো হয়। অতীতের সবগুলো জরিপই করা হয়েছিল পাগমার্ক (পায়ের ছাপ) পদ্ধতিতে। সে হিসাবে তিন বছরের ব্যবধানে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ২৮ শতাংশ।
জরিপ দলের ধারণা, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের পর গোটা বনে কমপক্ষে ৫০টি বাঘ বেড়েছে। এর আগে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের গণনায় বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। পরের বছর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪টিতে। ফলে চলতি বছর বাঘের সংখ্যা ১৬৪ হতে পারে।