২৯৭ শিক্ষার্থী, শিক্ষক মাত্র দুই - দৈনিকশিক্ষা

২৯৭ শিক্ষার্থী, শিক্ষক মাত্র দুই

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) |

শিক্ষার্থী ২৯৭। শিক্ষক মাত্র দুইজন। প্রধান শিক্ষককে অফিসিয়াল কাজে শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন সভা, সমাবেশে, ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই ২৯৭ শিক্ষার্থীর পাঠদান একজন শিক্ষকের ওপর নির্ভর হয়ে পড়ছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নের চর গঙ্গামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ চিত্র। বিদ্যালয়বিহীন গ্রাম হিসেবে চরাঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে উপকূলীয় স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। এ কারণে বাড়ছে ঝরে পড়ার হার।

২০১৮ খ্রিস্টাব্দে এ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলো ৩৫ জন। এটা কাগজে কলমের হিসাব। বাস্তবে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৫ জন। হাজিরা খাতায় নাম থাকলেও বাকিরা ছিল অনুপস্থিত। এ বিদ্যালয়ে হাজিরা খাতায় চতুর্থ শ্রেণিতে ৩৮, তৃতীয় শ্রেণিতে ৫৩, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৬৪, প্রথম শ্রেণিতে ৬৫ ও প্রাক প্রাথমিকে ৪৪ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। কিন্তু শিক্ষক মাত্র দুজন।
বিদ্যালয়ে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায়, এ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী কারিমা (রোলনং ২০) এখন পাশ্ববর্তী মোয়াজ্জেমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী (রোলনং ৩৪)। দুই বিদ্যালয় থেকে সে পাঠ্য বই নিয়েছেন। উপবৃত্তির জন্য নাম পঠানো হয়েছে। এক ছাত্রী দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিভাবে হলো এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি দুই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। 

চর গঙ্গামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ জানান, সাগরঘেঁষা এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবাই শ্রমজীবী পরিবারের। এরাও অনেকে স্কুলের অবসরে শ্রমবিক্রি করে। এ কারণে স্কুলে ভর্তি হয়েও তারা ক্লাসে আসে না। কিন্তু তারপরও বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ভালো। কিন্তু সমস্যা হলো শিক্ষক সংকট। তিনি বলেন, তাকে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা অফিস, সরকারি বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও অফিসিয়ালি কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। তখন অপর শিক্ষক কামরুজ্জামানকে দুই শিফটের পাঁচ ক্লাস নিতে হয়। একজন শিক্ষকের পক্ষে এক সাথে সব শিক্ষার্থীদের পড়ানো কিভাবে সম্ভব। বিদ্যালয়ে হাজিরা খাতায় নাম থাকলেও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত না হওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, অনেকে স্কুলে ভর্তি হয়ে চলে গেছে। কেউ আবার অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এ কারণে তারা অনুপস্থিত। এদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। 
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. সোহরাব হাওলাদার বলেন, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে। কিন্তু তাদের বৈষম্যের কারণে ছাত্র-ছাত্রী বেশি থাকার পরও শিক্ষার্থীরা শিক্ষক না থাকায় সঠিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারণে ঝরে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে।

মোয়াজ্জেমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা বেগম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, কোন শিক্ষার্থী যদি এক স্কুলে নাম থাকা অবস্থায় আমার স্কুলে ভর্তি হয় তাতে আমাদের কি করণীয় আছে। তারা বিদ্যালয়ে পাঠদানে সচেষ্ট থাকায় শিক্ষার্থীরা এই স্কুলের প্রতি আগ্রহী হচ্ছে। আর তাদের শিক্ষক সংকটও নেই।

কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, তিনি বর্তমানে বরিশাল প্রশিক্ষণে আছেন। তাই বিষয়টি সম্পর্কে অবহত নন। তবে শিক্ষক সংকট সমাধানে তারা চেষ্টা করছেন বলে জানান।

 

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047481060028076