৬৭ বছর বয়সে লেখাপড়া - দৈনিকশিক্ষা

৬৭ বছর বয়সে লেখাপড়া

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

রুসিয়া বেগমের বয়স ৬৭ বছর, পড়েন চতুর্থ শ্রেণিতে। নিয়মিত ক্লাস করেন তিনি। ক্লাসে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লেখাপড়া নিয়ে প্রতিযোগিতাও আছে তাঁর। ক্লাস-পরীক্ষায় কখনো এগিয়ে যাচ্ছেন, কখনো একটু পিছিয়ে পড়ছেন। গত বছর তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষায় রুসিয়াকে টপকে তাঁরই সহপাঠী ১০ বছর বয়সের জান্নাতুল ফেরদৌস প্রথম হয়েছে। রুসিয়া হয়েছেন দ্বিতীয়। এর আগের বছর রুসিয়াই ছিলেন প্রথম। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আজাদ রহমান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রুসিয়া অবশ্য দাবি করেন, পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় তিনি ভালো ফল করবেন। সে লক্ষ্য নিয়ে লেখাপড়া করে যাচ্ছেন। ছোটবেলায় গ্রামে স্কুল না থাকায় লেখাপড়া করতে পারেননি। কোনো কিছুই পড়তে পারতেন না তিনি। ধর্মীয় লেখাপড়াও সম্ভব হতো না তাঁর। তাই এই বয়সে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। আশা আছে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার।

রুসিয়া ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা সদরের আবুল হোসেনের স্ত্রী। তাঁর এক ছেলে আর এক মেয়ে রয়েছে। যাঁরা উভয়েই বিবাহিত। ছেলে গোলাম মোস্তফার দুই মেয়ে ফারহানা মোস্তফা দশম শ্রেণির ও ফারজানা মোস্তফা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। রুসিয়া উপজেলার শিশুকলি বিদ্যানিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রী।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে শিশুকলি বিদ্যানিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণিতে সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাস করছেন রুসিয়া। সামনের সারির বেঞ্চে বসেছেন তিনি। পাশেই আছে মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ও রিমি রহমান। ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন। এই প্রতিবেদক ক্লাসে প্রবেশ করতেই অন্য সব শিক্ষার্থীর মতো রুসিয়াও উঠে দাঁড়িয়ে সালাম জানান। এরপর সবার সঙ্গে বসে পড়েন। রুসিয়া জানান, কুষ্টিয়ার বৃত্তিপাড়া এলাকার ভগবাননগর গ্রামের তাহাজ উদ্দিনের মেয়ে তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়। সেই সময়ে মেয়েরা বেশি দূরে গিয়ে লেখাপড়া করত না। পরিবার থেকে দূরে পাঠানো হতো না। তাঁদের গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না, যে কারণে তিনিও স্কুলে যেতে পারেননি। বিয়ের পর সংসার করেছেন। স্বামী একটি চাকরি করেন। তাঁদের সংসারে ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতিন সবই আছে। স্বামীও কিছুটা লেখাপড়া জানেন। শুধু নেই তাঁর মধ্যে কোনো বিদ্যা। নিজে কোনো চিঠি পড়তে পারেন না। এমনকি কোরআন শরিফ পড়েও এর অর্থ বোঝেন না। যে কারণে তিনি সিদ্ধান্ত নেন লেখাপড়া শিখবেন। নিরক্ষর হয়ে মৃত্যুবরণ করতে চান না।

রুসিয়া জানান, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিশুশ্রেণিতে ভর্তি হন। এক বছর পর প্রথম শ্রেণি। এভাবে নিয়মিত ক্লাস করে বছর শেষে পরীক্ষা দিয়ে ক্লাসে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এর আগে তাঁর সব ক্লাসে রোল নম্বর ছিল ১, এ বছর হয়েছে ২।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039639472961426