অতিরিক্ত ক্লাসের নামে স্কুল কক্ষেই চলে কোচিং - দৈনিকশিক্ষা

অতিরিক্ত ক্লাসের নামে স্কুল কক্ষেই চলে কোচিং

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি |

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চলাকালে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও তা অমান্য করে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষকদের দাবি, কোচিং বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের কোনো লিখিত নির্দেশ তাঁরা হাতে পাননি। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কোচিং চালু রাখা হয়েছে। আর জেলা প্রশাসক বলছেন, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোচিং চালু রাখলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চলমান জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার আগে ২০ অক্টোবর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একাধিকবার সভা করা হয়। সেই সঙ্গে পরীক্ষা চলাকালে সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের এমন নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। সরকারি বিদ্যালয়গুলোও এর বাইরে নয়। নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে চলছে অতিরিক্ত টাকা আয়।

কোচিংয়ে আসা বেশির ভাগ শিক্ষার্থী জানায়, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার কারণে স্কুলে কোচিংয়ে কিছুটা সময় পরিবর্তন হয়েছে, তবে কোচিং বন্ধ হয়নি। বিদ্যালয়ের ক্লাসে তেমন লেখাপড়া না হওয়ার কারণে কোচিং করছে তারা। আবার অনেকে বলছে, বিদ্যালয়ে নির্ধারিত বিষয় বুঝে ওঠার আগেই ঘণ্টা বেজে যায়। ফলে কোচিংয়ে এসে তারা সেই পড়া আবার বুঝে নেয়। 

সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিয়া জাহিন নাজিবা জানায়, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে। তবে কোচিং খোলা রয়েছে। সকালে জেএসসি পরীক্ষা থাকলে বিকেলে স্কুলের ভেতরে কোচিং করে তারা।

একই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী দিনহাজ আফরিন জয়া জানায়, স্কুলের তুলনায় কোচিংয়ে ভালো লেখাপড়া হয়। স্কুল চলাকালে শিক্ষকরা সময়ের অভাবে সেভাবে ক্লাস নিতে পারেন না। তবে কোচিংয়ে অনেক সময় দেন শিক্ষকরা।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা বলে, ‘মোকসেদুল ও মোবারক স্যার আমাদের কোচিং করান। তাঁদের কাছে প্রায় ৮০-৯০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়মিত পড়ছে। কোচিংয়ের জন্য স্যাররা প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসে এক হাজার ২০০ টাকা নেন।’

সরকারি বিদ্যালয়ের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের কোচিং করানোর দৃশ্য দেখা গেলেও এ বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলী হোসেন, আব্দুল আল মামুন, সিন্ধু দেবনাথ, নুরে আক্তার বানু জানান, তাঁরা বিদ্যালয়ের ভেতরে অতিরিক্ত ক্লাস নিচ্ছেন। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চলাকালে ক্লাস বন্ধ রাখায় সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা তাঁদের জানা নেই। স্কুল থেকেও কোনো নোটিশ পাননি তাঁরা।

একই অবস্থা সদর উপজেলার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়েরও। সেখানেও জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চলাকালে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোচিং ব্যবসা চালাচ্ছেন বেশির ভাগ শিক্ষক।

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিযুষ কান্তি রায় জানান, এ বিষয়ে অবগত নন তিনি। তবে নিয়ম না মেনে কেউ কোচিং করালে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলাউদ্দীন আল আজাদ বলেন, ‘জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চলাকালে শুধু বিদ্যালয়ে নয়, বাইরেরও সব ধরনের কোচিং বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার পরও যদি কেউ সরকারি স্কুলে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কোচিং চালান—সেটা খুবই দুঃখজনক।’

জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কেউ কোচিং চালালে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003972053527832