পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের অপসারণের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠেছে পৌরসদর।
ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কলেজটির শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। পোস্টার, লিফলেট ও ফেস্টুনে গোটা পৌর এলাকা ছেয়ে গেছে। এদিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইছহাক আলী মানিককে আহ্বায়ক করে ‘দুর্নীতি ও মাদকবিরোধী সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ মিজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চিঠি দিয়েছে। ১৪ মার্চ দেয়া চিঠিতে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে মিজানের বক্তব্য গ্রহণের কথা বলা হয়। জানতে চাইলে দুদকের (পাবনা) সহকারী পরিচালক মো. আতিকুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এদিকে ৭ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা) মো. সোহরাব হোসেনের নির্দেশে মাউশির পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করে মতামতসহ প্রতিবেদনটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠিটি চাটমোহরে পৌঁছেনি বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:টাকার মেশিন অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান
অধ্যক্ষ মিজানের অপসারণের দাবিতে এলাকায় পোস্টারিং করেছেন অ্যাডভোকেট সাইদুল ইসলাম চৌধুরী। দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর আগে তিনি খোলা চিঠিও লেখেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাইদুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর চাকরি করে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান যে পরিমাণ সম্পদ করেছেন তাতেই বোঝা যায়, সত্যিই তার টাকার মেশিন আছে। চাটমোহরে তার মতো এমন দুর্নীতিবাজ লোক একটাও নেই। কিছু অসৎ রাজনীতিবিদ তাকে মদদ দিচ্ছে। মদদদাতাদের সম্পদের হিসাব নেয়ার দাবিও তিনি জানান। এছাড়া অধ্যক্ষ মিজানের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিচ্ছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
অধ্যক্ষ মিজানের ছত্রছায়ায় কলেজের অফিস সহকারীর হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা, পদ সৃজনের জন্য শিক্ষকদের আত্তীকরণের ফাইল সংশ্লিষ্ট দফতরে না পাঠানোসহ বিভিন্ন কারণে অধ্যক্ষ মিজানের অপসারণ দাবিতে কলেজের শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জনসহ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার থেকে তারা এ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
‘টাকার মেশিন কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান’ শিরোনামে ২৭ অক্টোবর প্রথম পাতায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপর খবরটি ভাইরাল হয়। অধ্যক্ষ মিজানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, নিন্দা ও তার অপসারণ চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।