কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হাজার হাজার সনদ বিক্রির প্রতিষ্ঠান বেসরকারি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শাখা ক্যাম্পাস (আউটার) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। সোমবার (২৫ জুলাই) মন্ত্রণালয় দারুল বন্ধ সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করেছে বলে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সাইফুল্লাহ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মো. হেলালউদ্দিন দৈনিক শিক্ষাকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে এখন দারুল ইহসান নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না।
তবে যারা এখন এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়াশোনা করছে তাদের কী হবে তা জানানো হয়নি মন্ত্রণালয়ের আদেশে। অতিরিক্ত সচিব কিংবা সচিবও বলতে পারেননি কী হবে অধ্যয়ণরত শিক্ষার্থীদের।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দারুল ইহসানের নানা অনিয়ম তদন্ত করতে বিচারপতি কাজী এবাদুল হককে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। তদন্ত কমিশন ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে দাখিল করা প্রতিবেদনে দারুল পরিচালনার সরকারি থেকে দেয়া সাময়িক সনদটি বাতিলের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু মামলার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এতদিন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি মন্ত্রণালয়।
অভিযোগ আছে, ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যায়টি ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে চার ভাগে বিভক্ত হয়ে সারা দেশে অসংখ্য শাখা ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষার নামে সনদ-বাণিজ্য শুরু করে। যদিও শুরুতে খুবই ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছিল দারুল ইহসান। বিএনপি-জামাত সরকার আমলে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির প্রতিবেদনেও প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম চিহ্নিত করে। ছবি দেখুন।
দৈনিকশিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, মূল ক্যাম্পাসের দাবীদার ধানমন্ডি ৯ নং রোডের শাখাটির ভিসি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুনের আপন ভাই আনোয়ার ইসলাম। দারুলের কয়েকটি শাখা থেকে সহকারি গ্রন্থাগারিকসহ কয়েকটি বিষয়ের সনদ কিনে তা শিক্ষা অধিদপ্তরে জমা দিয়ে এমপিওভুক্ত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারি। এতে সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা গচ্চা যাবে বছরের পর বছর ধরে।