রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ৮টি সিনিয়র মাদ্রাসার ১৫৫ জন উত্তীর্ণ ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে একমাত্র জিপিএ-৫ পেয়েছে মোছাঃ গাওহারে দিল রওশন। সে উপজেলার ধুমের পাড় সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষায় জিাপএ-৫ পেয়ে “সাবেধন নীল মনি” হিসেবে আখ্যা পেয়ে ইর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করে গ্রামবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। রওশন রাজার হাটের সুলতান বাহাদুর গ্রামের আব্দুল হাই মিয়া ও রশিদা বেগমের তৃতীয় কন্যা।
পিতা সামান্য বেতনে মসজিদে ইমামতি করেন, মা গৃহিনী। বাড়ি ভিটা ছাড়া তেমন কোন সম্পদ নেই। পিতা ইমামতি ছাড়াও একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কর্মী হিসেবে কাজ করেন। যা আয় করেন তা দিয়েই ৭ জনের সংসার। রওশন জানায় বড় বোন হাফছা খাতুন, কামিল ১ বর্ষে, দ্বিতীয় বোন হাসনা হেনা অনার্স ২য় বর্ষে। আমার ছোট ভাই রাসেল বাবু আলেম ২য় বর্ষে ও সব ছোট বোন জান্নাতুল ফেরদাউস হ্যাপি ৮ম শ্রেণিতে পড়ে । বাবা ৫ ভাই বোনের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
মা রশিদা বেগম জানায় তিনি সেলাইয়ের কাজ করে সংসারে অর্থ যোগান দেন। মেয়েরা এলাকায় প্রাইভেট পড়িয়ে বই-খাতা-কলম কিনে পড়ালেখা খরচ চালিয়ে যায়। ভাল পোশাক, পুষ্টিকর খাবার জুটেনি তার ভাগ্যে। অনাহার-অর্ধাহারে থেকেও পড়াশুনায় পিছপা হয়নি কখনো। ৪ কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে মাদ্রাসা যেত সে। সর্ব শেষে আলিম পরীক্ষায় ফরমফিলাপ এর ফি মাদ্রাসার শিক্ষকরাই চাঁদা তুলে দিয়েছেন।
অতি কষ্ঠে এতদূর আসতে পারলেও এখন রওশনের দু-চোখে শুধু অন্ধকার। তার স্বপ্ন বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার। কিন্তু চরম দারিদ্রতা তার সেই স্বপ্ন পূরনে বড় বাঁধা। এবাঁধা ডিঙ্গিয়ে সেই স্বপ্ন সত্যি হবে কিনা সেই চিন্তা এখন সারাক্ষণ রওশনের।
মা রশিদা জানায় তার মেয়ে বিশ্ব বিদ্যালয়ের পাঠ চুকে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বড় কর্মকর্তা হতে চায়। কিন্তু তার দরিদ্র বাবার জন্য এত টাকা যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি মেয়ের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিত্তবান ও বিবেকবান মানুষের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছেন।