মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ইউনিক কোড দেয়া হবে। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত তাদের ওই কোডের মাধ্যমে শনাক্তকরণ এবং রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। কয়েক বছর আগে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলেও সম্প্রতি এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ লক্ষ্যে শিক্ষাবোর্ডগুলো কাজ শুরু করেছে আরো কয়েকবছর আগে থেকেই।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি করে একটি ইউনিক কোড দেয়া হবে। এর মাধ্যমে ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি, বদলি, বৃত্তি, জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরি, রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান, বিবাহসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হবে।
নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সেসব তথ্য একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকবে। এরপর আর কোথাও নতুন করে তার ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করতে হবে না।
জানা গেছে, ‘মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে এ উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। এ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সারাদেশের এক কোটি ৯০ লাখ শিক্ষার্থীর প্রোফাইল তৈরি করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। পর্যায়ক্রমে সকলস্তরের শিক্ষার্থীদের এর আওতাভূক্ত করা হবে। এটি নিয়ন্ত্রণ করবে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
ইতোমধ্যে ব্যানবেইস পাইলট প্রকল্প হিসেবে দেশের নয়টি অঞ্চলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য যুক্ত করেছে। প্রকল্পটির অনুমোদন পেলেই পুরোদমে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। আগামী জুলাই থেকে অনলাইনে তথ্য সংগ্রহ করে প্রোফাইল প্রণয়নের কাজ শুরু হবে।
শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরির জন্য ব্যানবেইসের সহায়তায় তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ব্যানবেইস পরিচালক মো. ফসিউল্লাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তথ্যের বিভ্রান্তি দূর করতে এ প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নিবন্ধিত সকল তথ্য সরক্ষণ থাকবে এবং পরবর্তীতে সেখান থেকেই তথ্য যাচাই-বাছাই করা যাবে।
অনলাইনে তথ্য সংগ্রহের পর প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ইউনিক আইডি দেয়া হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ আইডির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া, স্থানান্তরসহ তার অবস্থান সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
ফসিউল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছর হলে সে তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারে সংযুক্ত হবে। ফলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর পাওয়া সহজ হবে। মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সঠিক তথ্য থাকলে ভবিষ্যতে তারা যখন উচ্চ শিক্ষায় যাবে তখনও তাদের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা সরকারের জন্য সহজ হবে। এছাড়া বয়স পরিবর্তনের যে ঝামেলা সেটা থেকেও মুক্ত থাকা যাবে।
ইতোমধ্যে নয়টি অঞ্চলে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।