ইন্টারনেটে সহজলভ্য বই, পাঠক কমছে চবি গ্রন্থাগারে - দৈনিকশিক্ষা

ইন্টারনেটে সহজলভ্য বই, পাঠক কমছে চবি গ্রন্থাগারে

চবি প্রতিনিধি |

গ্রন্থাগারে দিন দিন কমে আসছে পাঠক সংখ্যা। ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও যেখানে এক প্রকার শিক্ষার্থীদের ভিড় জমে থাকত সেখানে এখন একেবারে ফাঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র এই পাঠাগারে পাঠক থাকে কোনো দিন আটজন, দশজন। আবার কোনো দিন একেবারে শূন্য। এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের এখনকার চিত্র।

হাতের মুঠোয় ইন্টারনেট সুবিধা থাকার কারণে পাঠাগারের প্রতি এই বিমুখত‌া সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন,‘পাঠাগারে শিক্ষার্থীরা না যাওয়ার কারণ ইন্টারনেট সু্বিধা।পাঠাগারে যে বইগুলো প্রিন্টেড আকারে রয়েছে সেগুলো প্রায় ইন্টারনেটেও পাওয়া যাচ্ছে।তাই শিক্ষার্থীরা পাঠাগার থেকে ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন লেখকের হুবহু রেফারেন্স বইগুলো পাঠাগারে পাওয়া না গেলেও ওই সম্পর্কিত একাধিক বই এখন ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। তাই পাঠাগারে যাওয়া হয় না। তবে একেবারে যায় না তা কিন্তু ঠিক না। যে বইগুলো ইন্টারনেটে পাওয়া যায় না সেগুলো পড়ার জন্য মাঝে-মধ্যে পাঠাগারে যাওয়া হয়।’

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে দেখা যায়, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে রয়েছে দুইটি সেকশন। দোতলা এই সেকশনে শিক্ষার্থীরা পড়ার সুবিধার্থে উপরে রয়েছে ২০টি আসন।নিচে দুই সারিতে ৩০টি করে রয়েছে আরও ৬০টি আসন।পাঠকের অভাবে এই কর্নারে মোট ৮০টি আসনের অর্ধেকেরও বেশি আসন খালি পড়ে থাকে।

মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে বিপরীত পাশে বিজ্ঞান পাঠকক্ষ নামে রয়েছে আরও দুটি সেকশন। সেখানেও উপরে নিচে থাকা প্রায় ৫০টি আসনে পাঠক থাকে কোনো দিন আটজন, দশজন। তথ্যমতে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলার দিনগুলোতে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে ১২ বছর ধরে স্টাফ হিসেবে কাজ করা মো. ইমতিয়াজ বলেন, ‘১০ বছর আগে এখানে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা বেশি ছিল। এই সেকশনে প্রায় ৬০টি আসনই ভরপুর থাকত। কিন্তু এখন অর্ধেকেরও বেশি আসন খালি থাকে।’

বিজ্ঞান পাঠকক্ষ কর্নারে ১৫ বছরও বেশি সময় ধরে স্টাফ হিসেবে কাজ করা নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি যথন প্রথম প্রথম কাজ করি তখন প্রচুর শিক্ষার্থী আসতেন। বিভিন্ন লেখকের রেফারেন্স বইগুলো পড়তেন তারা। পাঠাগারে আগের চেয়ে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমেছে।’

এদিকে পাঠাগারে যেহেতু শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে না সেহেতু পাঠাগারকে আধুনিকায়ন করার পক্ষে মত দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আবুল মনছুর বলেন, ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারগুলোও কিন্তু ডিজিটাল।পাঠাগারে যে বইগুলো রয়েছে সেগুলো কোড দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ইন্টারনেটে ব্যবহারে উপযোগী করে দিয়েছে।সেরকম করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারকেও করা যেতে পারে।এই জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সভায় আলোচনাও হয়েছে।এ লক্ষ্যে কাজও করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’

পাঠাগারে শিক্ষার্থীরা না যাওয়ার আরেকটি কারণ হিসেবে ফেসবুকে সময় ব্যয়কে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক নেতা এই আবুল মনছুর।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন মোবাইল নিয়ে যতখানি ব্যস্ত পড়ালেখা নিয়ে ততখানি ব্যস্ত না। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা এখন সিংভাগ সময় ফেসবুকে পড়ে থাকে। তাই তাদের পাঠাগারে বসে বই পড়ার সময় কই? এই গন্ডি থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. কামরুল হুদা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নিয়েছি। এ লক্ষ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রকাশিত বিভিন্ন জার্নাল পাঠাগারে পাশাপাশি কোড দিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার পুরোপুরি আধুনিকায়ন হবে বলে আশা করছি।’

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034959316253662