‘নো বিসিএস নো ক্যাডার’ স্লোগান দিয়ে উপজেলা সদরে একটি করে কলেজ জাতীয়করণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা দুই শতাধিক সরকারি কলেজ শিক্ষক কোনও পরীক্ষা ছাড়াই বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব হতে চান। গত জুন মাসে তারা আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে একশত জনের নাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তালিকাটি আরও সংক্ষিপ্ত করে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় থাকা তালিকাটি বিভিন্ন পর্যায়ে যাচাই-বাছাই চলছে।
তবে, এক প্রশ্নের জবাবে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘আমিও চাই উপ-সচিব পদে পদোন্নতিভিত্তিক নিয়োগে পরীক্ষা নেয়া হোকা। কোনও পরীক্ষা ছাড়াই উপ-সচিব হওয়া নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা রয়েছে।’
সরকারিকরণের তালিকাভুক্ত শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, কোনও পরীক্ষা ছাড়াই ১০ শতাংশ কোটায় শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত হওয়া এবং ২০০ নম্বরের টিক বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেয়া শিক্ষকরাও “নো বিসিএস নো ক্যাডার স্লোগান’ দিয়ে সরকারিকরণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করেছে।’
তিনি বলেন, নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্তরা কমপক্ষে দুইশত নম্বরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। যে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে তুলনামূলক মেধাবীদের পছন্দের ক্যাডার প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক। এছাড়াও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আগে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক আলাদা পরীক্ষায় বসতে হতো যেখানে মহাপরিচালকের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারি কলেজের শিক্ষকরা মোটা খাম পেয়ে খুশীতে গদগদ হতেন।’
‘উপসচিব পদের জন্য অবশ্যই আলাদা পরীক্ষা নেয়া উচিত,’ যোগ করেন হাবিবুর।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে উপসচিবের সংখ্যা ১ হাজার ৭৪৫ জন। যদিও, উপসচিবের নিয়মিত পদ সাড়ে ৮শ’র মতো। তবু আরো উপসচিব নিয়োগ দেবে সরকার। বিধান অনুযায়ী, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ ও মেধাবীদের কাছে অপেক্ষাকৃত কম পছন্দের তথ্য, সমবায়, ডাক, মৎস ও শিক্ষা ক্যাডারসহ বাদবাকী ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ উপসচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগে কোনও পরীক্ষা দিতে হয় না্। নিয়োগ পেয়ে বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব হন এবং সরকারি প্লট, ফ্ল্যাট ও গাড়ী কেনার জন্য ৪৫ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পান্।
সরকারি কলেজ থেকে উপসচিব পদে আবেদনকারীদের নাম ধারাবাহিকভাবে দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশ হবে শিগগিরই।