এক শিক্ষকের বেতন সাড়ে তিন কোটি টাকা! - দৈনিকশিক্ষা

এক শিক্ষকের বেতন সাড়ে তিন কোটি টাকা!

সাঈদ হোসেন |

Taka 400-230টাঙ্গাইলের এক এমপিওভুক্ত হাইস্কুলের সহকারি গ্রন্থাগারিককে জানুয়ারি মাসে সাড়ে তিন কোটি বেতন দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার মাটিকাটা এম  এল হাইস্কুলের সহকারি গ্রন্থাগারিক সালমা খাতুনের প্রকৃত বেতন ৮ হাজার টাকা হলেও তার জন্য জানুয়ারি মাসের বেতন বাবদ ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রশাসনের নানাস্তরে তক্কে তক্কে থাকা দৈনিকশিক্ষার সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে এই ভয়াবহ দুর্নীতির ঘটনা জানা যায়।

মাউশির দুজন এমপিও দালাল এবং ইএমআইএস সেলের তিনজন এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

মাউশির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার, ব্যাংক ক্যাশিয়ার ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা  একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবত এহেন দুর্ণীতি করে আসছে। ইএমআইএস সেলের সফটওয়ার দূর্বলতার সুযোগে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে প্রতিমাসে কিন্তু দেখার কেউ নেই।

মাউশির মাধ্যমিক শাখার পরিচকালক অধ্যাপক মো. এলিয়াছ হোসেন সোমবার সাড়ে তিন কোটি টাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেও বুধবার নীচুস্বরে বলেন হয়তো ভুল হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত করে দেখছেন। অতিরিক্ত টাকা দেওয়া হলে তা ফেরত নিয়ে আসা হবে ইত্যাদি বলছেন আর বৈঠক করছেন দফায় দফায়।

জানা যায়, এমপিও দুর্নীতির সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন যাবত এমন কোটি কোটি টাকা দিয়ে আবার সেই টাকা তুলে নিয়ে ভাগাভাগি করে আসলেও এবারই প্রথম দৈনিকশিক্ষার অনুসন্ধানে তা ধরা পড়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সালমা খাতুন বিতর্কিত ও সনদ ব্যবসায়ে নিয়োজিত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের টাঙ্গাইল শাখা থেকে গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ে ডিপ্লোমা সনদ কিনে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পান চার বছর আগে। এরপর শর্ত সাপেক্ষে প্রকৃত স্কেলের এক ধাপ নিচের স্কেলে এমপিওভুক্ত হন তিনি।

সহকারি গ্রন্থাগারিক পদটি নন-টিচিং স্টাফ হলেও প্রায় সব সহকারি গ্রন্থাগারিকই প্রতিদিন ৪/৫টি ক্লাস নিয়ে থাকেন। সালমা ক্লাস নেন। শিক্ষার্থীরাও তাদেরকে শিক্ষক হিসেবেই জানে ও সম্বোধন করে থাকে।

জানা যায়, সালমা খাতুন গত নভেম্বর মাসের দারুল ইহসানের ধানমন্ডি শাখা থেকে গ্রন্থাগার বিজ্ঞানের ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট কিনে তা মাউশিতে জমা দেওয়ায় চলতি জানুয়ারি মাসে তাকে ৮ হাজার টাকার স্কেল প্রা্প্য হন।

এক প্রশ্নের জবাবে সালমার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম আজ বুধবার রাতে সালমার জন্য পাঠানো সাড়ে তিন কোটি টাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইএমআইএস সেল ও অধিদপ্তের থেকে একাধিক ফোনে ভিন্ন ভিন্ন আদেশ পেয়েছেন। ৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার জানুয়ারি মাসের বেতন তোলার শেষ দিন। টাকাটি যাতে সালমা তুলতে না পারেন সেজন্য প্রধান শিক্ষক যথাযথ ব্যবস্থা নেবেনে বলে দৈনিকশিক্ষাকে জানিয়েছেন।

গত ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে ২৭৩ জন এমপিও জালিয়াতি তথ্য উদঘাটন করে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র অনলাইন জাতীয় পত্রিকা দৈনিকশিক্ষাডটকমের সাংবাদিকরা। সেইবারেও প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে ওই ২৭৩ জনের এমপিও স্থগিত করতে বাধ্য হয় মাউশি অধিদপ্তর।

২৭৩ জনের ওই জালিয়াতি নিয়ে ইন্ডিপেন্ডেট টিভির তালাশও বিশেষ প্রতিবেদন করে। শাস্তিস্বরুপ কয়েকজন দুর্নীতিবাজকে শুধু মাউশির বাইরে বদলি করা হয়। বিষয়টি নিয়ে এখনও দুদকের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

শাহেদ আজগর নামের মাউশির এক অফিস সহকারি পলাতক রয়েছে। শাহেদ একাই প্রায় ১ কোটি টাকার এমপিও জালিয়াতি করেছে বলে জানা যায়।


কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0055150985717773