সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন হবে কি? - দৈনিকশিক্ষা

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাস্তবায়ন হবে কি?

মোহাম্মাদ আনিসুর রহমান |

উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য কোচিং বাণিজ্য শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা এখনও জানে না, এবারের ভর্তি পরীক্ষা সমন্বিতভাবে বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে হবে, নাকি আগের মতো ‘গোল্লাছুট’ পদ্ধতিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সামনে ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে একটি গঠনমূলক এবং পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা থাকা দরকার। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ৭৭তম সিন্ডিকেট (বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮) সভায় ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতি ঠেকাতে এমসিকিউ পদ্ধতি বা বহুনির্বাচনী প্রশ্ন তুলে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হয়তো তারা এটা তাদের জন্য ভালো মনে করেছে। তাহলে এর অর্থ কি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে থাকবে না, নাকি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে তারা ভাবছেন না?

অথচ ১ ফেব্রুয়ারি মহামান্য রাষ্ট্র্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বৈঠকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ভর্তিচ্ছু, বিশেষ করে ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের ভর্তিকালীন দুর্ভোগ কমাতে সমন্বিত সহজ ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার কথা বলেছিলেন।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন- ভর্তি পরীক্ষার সময় বিভিন্ন এলাকার মসজিদেও ভর্তিচ্ছুদের অবস্থান করতে হয়েছে।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার গাইডলাইন তৈরি করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। দুই কমিটি সমন্বয় করে ভর্তি পরীক্ষার নীতিমালা তৈরি করার কথা বলা হয়েছিল।

কমিটিকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নীতিমালা সংক্রান্ত ধারণাপত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার কথা ছিল। ভর্তি পরীক্ষার আর বেশি দিন বাকি না থাকায় এ বিষয়ে এখনই শিক্ষার্থীদের সামনে একটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং গঠনমূলক রূপরেখা থাকা প্রয়োজন।

প্রতিবছর আলোচনা হলেও শেষদিকে এসে এটি আর সফল হয় না। ২০০৮ সালে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠকে গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব হওয়ার আশঙ্কা করায় তা থেমে যায়।

২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। কিন্তু ওই বৈঠকে কয়েকটি বড় বিশ্ববিদ্যালয় অসম্মতি জানায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১০, ২০১১ এবং ২০১২ সালেও এ বিষয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করে।

২০১৩ সালের ৭ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপাচার্যদের এক সভায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে আলোচনা হলে অধিকাংশ উপাচার্যই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিলেন। কিন্তু স্বায়ত্তশাসনের অজুহাতে আবারও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাগ্রহ ও আপত্তির কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ উদ্যোগটি ভেস্তে যায়।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেরা সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নিলেও সিলেটে স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।

ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের নভেম্বরে ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদের কাছে দেয়ার সময় আচার্য শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। পরে ইউজিসি চেয়ারম্যান এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন।

মন্ত্রণালয় উপাচার্যদের নিয়ে সভা করার তারিখ নির্ধারণ করলেও তা আর হয়নি। ২০১৭ সালের ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার সুপারিশ করা হয়। ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর ইউজিসির চেয়ারম্যান বার্ষিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়ার সময় রাষ্ট্রপতি পুনরায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। আর তাই ২০১৮ সালের ভর্তি পরীক্ষা সমন্বিত বা গুচ্ছপদ্ধতিতে হবে, নাকি আগের মতো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা আবার ছুটে বেড়াবে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া- এর একটি যৌক্তিক ও গঠনমূলক দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে ধোঁয়াশা দূর করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের এই দ্বৈতনীতি বা কখনও কখনও বহুমুখী নীতির কারণেই সমস্যা সৃষ্টি হয়, সমস্যাগুলো থেকে যায়; সমাধান আর হয় না।

প্রতিবছর কত হাজার ছেলেমেয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারে না শুধু এই পদ্ধতির কারণে, তার হিসাব কি কেউ করেন? গ্রামের অনেক মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অলীক স্বপ্নের মতো। গ্রামের অনেক পিতামাতা মেয়েকে এ ঘাট ও ঘাট ছুটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করানোর পক্ষে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া তো অনেক দূরের ব্যাপার! তারা তাদের সন্তানদের ভর্তি করে দেন বাড়ির কাছের কোনো কলেজে।

তাছাড়া ভূমিহীন কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের সন্তানদের কী হবে? তারা কোথায় পাবেন আলাদা আলাদা ফরম কেনার টাকা? দারিদ্র্যের সঙ্গে যাদের নিত্য বসবাস, মধ্যবিত্ত আর নিুমধ্যবিত্ত পরিবারে যাদের জন্ম, যাদের বেশিরভাগই এইচএসসি পরীক্ষাটা কোনোরকম কষ্ট করে পার করতে পারে, তাদের অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হয় না পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া।

এ প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে পড়ছে গ্রামের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা। তাদের অনেকেই একদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়ে যেমন ভাবেন না, তেমনি দিনাজপুর থেকে চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে খুলনা, খুলনা থেকে রাজশাহী, রাজশাহী থেকে সিলেট, সিলেট থেকে ঢাকা ঘুরে ঘুরে ভর্তি পরীক্ষার কথা কল্পনাও করতে পারে না।

এমনও হয়- সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একইদিনে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে। আর অতিরিক্ত অর্থ খরচের বিষয়টি তো আছেই।

অনেকে মনে করেন, প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষার সুবাদে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে পরিমাণ টাকা আয় করছে, গুচ্ছপদ্ধতিতে তা হয়তো আর পারবে না। বড় একটা আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

সমন্বিত বা গুচ্ছপদ্ধতির ভর্তিতে আয় কমে যাবে ভেবে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি আর সামনের দিকে এগোচ্ছে না হয়তো। অবশ্য গত কয়েক বছর ধরেই মেডিকেল কলেজগুলোর ভর্তিতে সমন্বিত পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব হয়েছে। মেডিকেলে হয়তো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অনেক ইউনিট, অনেক পঠিত বিষয় নেই বলে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়া আপেক্ষিকভাবে সহজ।

সমন্বিত বা গুচ্ছভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা না হওয়ায় একটি আসনের বিপরীতে শতাধিক বা তারও বেশি শিক্ষার্থীকে লড়াই করতে হচ্ছে। প্রতিযোগিতায় টিকতে শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছেন। এটাই যেন তাদের কাছে নিয়ম বলে মনে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে পুঁজি করে কোচিং সেন্টারগুলো প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার আয়োজন করা হলে আসনপ্রতি প্রতিযোগীর সংখ্যা যেমন কমে আসবে, তেমনি অভিভাবকদের হয়রানি ও অর্থ খরচ কমে যাবে। কোচিং বাণিজ্যও নিরুৎসাহিত হবে।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে, কারা প্রশ্ন করবে, কীভাবে সে প্রশ্ন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, প্রশ্নপত্রের গোপনীয়তা রক্ষা কীভাবে হবে, ফল প্রকাশে স্বচ্ছতা রাখা যাবে কীভাবে, পরীক্ষার আবেদন ফরম কেমন হবে, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সম্ভাবনা থাকবে কিনা, সহজ সফটওয়্যার প্রস্তুতকরণ ইত্যাদিসহ অনেক কিছু ভাববার বিষয় রয়ে গেছে।

যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়া দরকার এখনই। নইলে এবারও নানা অজুহাতে ভর্তি পরীক্ষা সমন্বিত করা সম্ভব হবে না। আর সম্ভব না হলে এ ক্ষেত্রে আমাদের উদাসীনতা ও বিবেকহীনতা প্রকাশ পাবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্যের অভিপ্রায় মানে অলিখিত আইন, যা অখণ্ডনীয় বলে প্রতীয়মান হওয়াটাই কাম্য।

সমন্বিত অথবা গুচ্ছপদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে কিছু বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে- ১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তত্ত্বাবধানে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির মাধ্যমে কমিটি করে বিভিন্ন অনুষদের পরীক্ষা বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে গোপনীয়তা রক্ষা করে আলাদা করে ভাগ করে দেয়া যেতে পারে। এতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীদারিত্ব থাকবে।

২. যেসব বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে পরীক্ষা নেবে, সেগুলোর ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি এবং প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি গঠনের মাধ্যমে স্থান ও কাল আগে থেকে ঠিক করে নিয়ে অত্যন্ত সহজ করা যেতে পারে।

৩. সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা বুয়েটে বা সুবিধাজনক কোনো স্থানে সম্পূর্ণ আলাদা একটি সেল খুলে অন্য সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

৪. টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যতীত অর্থাৎ প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি প্রযুক্তি ও ভেটেরিনারি, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাড়া বাকি সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়) আগেই ইউনিট নির্ধারণ করে নিয়ে ‘এক ইউনিট এক প্রশ্ন’ এভাবে পরীক্ষা নিতে পারে।

৫. দেশের সব প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন: বুয়েট, ডুয়েট (ডুয়েটে যেহেতু পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়, সেহেতু এ ব্যাপারে আলোচনাসাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে), রুয়েট, চুয়েট, কুয়েট একসঙ্গে ‘এক ইউনিট এক প্রশ্ন’ এভাবে পরীক্ষা নিতে পারে।

৬. দেশের সব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে ‘এক ইউনিট এক প্রশ্ন’ এভাবে পরীক্ষা নিতে পারে।

৭. দেশের সব কৃষি প্রযুক্তি ও ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘এক ইউনিট এক প্রশ্ন’ এভাবে পরীক্ষা নিতে পারে।

৮. টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একসঙ্গে ‘এক ইউনিট এক প্রশ্ন’ এভাবে পরীক্ষা নিতে পারে।

৯. দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির জন্য পছন্দের শর্ত আরোপ করে দিতে পারে। শর্তপূরণ না হলে শিক্ষার্থীরা ওইসব বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দে রাখতে পারবে না, তাই তারা ভর্তিও হতে পারবে না। আর তাই এমন কথাও কোনোভাবেই বলা যাবে না যে, অমুক বিশ্ববিদ্যালয় ব্রাহ্মণ, অমুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা আলাদা ঐতিহ্য আছে।

১০. শিক্ষার্থী বাছাই মূল কাজ, এটা মাথায় রেখে ইউনিট যত কম করা যায়, সবার জন্য ততই ভালো।

১১. পরীক্ষার কেন্দ্র হতে পারে পরীক্ষার্থীর পছন্দের নিকটবর্তী কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

১২. মেডিকেল কলেজগুলোয় ভর্তির মতো পছন্দক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইগ্রেশনের সুযোগ রাখা যেতে পারে।

১৩. ফরমের মূল্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলোচনাসাপেক্ষে নির্ধারণ করে নিতে পারে, যেন তা উভয় পক্ষের জন্য ভালো হয় এবং খুব বেশি না হয়।

১৪. সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে এভাবে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে (৪, ৫, ৬, ৭, ৮) ভাগ করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে।

১৫. আমলাতান্ত্রিক জটিলতা যাতে তৈরি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সমস্যা থাকবে, সমস্যা আসবে। তবে আলোচনা শুরু হলে, এক-দু’বার পরীক্ষা হয়ে গেলে আরও ভালো ভালো পরামর্শ আসবে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। কোন বিশ্ববিদ্যালয় বড়, কোন বিশ্ববিদ্যালয় ছোট কিংবা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা ঐতিহ্য আছে- এসব না ভেবে বরং আসুন জাতি হিসেবে আমরা কত উদার এবং আমাদের যেসব ঐতিহ্য আছে তার কথা ভাবি। শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সন্তান। যথাযথ সুযোগ সৃষ্টি করে ওদের বড় করে তোলা আপনার-আমার সবার দায়িত্ব।

মোহাম্মাদ আনিসুর রহমান : পিএইচডি গবেষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বৈশ্বিক সুশাসন, জেঝিয়াং ইউনিভার্সিটি, চীন

 

সৌজন্যে: যুগান্তর

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056278705596924